বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।
আড়াই বছর বিজেপি, আড়াই বছর শিবসেনা। মুখ্যমন্ত্রী পদের ভাগাভাগি নিয়ে নাকি এমনই কথা হয়েছিল বন্ধ কামরার একান্ত বৈঠকে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের মধ্যে। ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে প্রকাশ্যে এমনই দাবি করে আসছেন উদ্ধব। কার্যত ‘মিথ্যাবাদী’ বলছেন অমিতকে। যে কারণে জোট জনমত পেলেও বিজেপির সঙ্গে আর সরকারই গড়ল না শিবসেনা।
এক সপ্তাহের বেশি চুপ থাকার পর আজ প্রথম মুখ খুললেন অমিত। উদ্ধবের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে ঠিক কী কথা হয়েছিল, তা ভেঙে না-বলে, জোর দিলেন প্রকাশ্যে কী বলা হয়েছে, তার উপরে। এক টিভি সাক্ষাৎকারে অমিত এ দিন মনে করিয়ে দেন, প্রকাশ্যে তিনি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফডণবীসই। সেই সময় কেউ এ কথার বিরোধ করেননি।
উদ্ধবের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে তবে কী কথা হয়েছিল?
সেটি আড়ালেই রেখেছেন বিজেপি সভাপতি। বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের সংস্কার নয়, ঘরের ভিতরের আলোচনা প্রকাশ্যে বলা। এটি উচিতও নয়। জনজীবনের একটি মর্যাদা থাকে। কিন্তু আমি একশো বার বলেছি, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমনকি খোদ দেবেন্দ্র ফডণবীসও বলেছেন, জোট সরকারে এলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্রই।’’ ভোট প্রচারের সময়ের মোদী-শাহের সেই সব ভিডিয়োও এখন সামনে আনছে বিজেপি। মোদীর এমনই এক সভা হয়েছিল মুম্বইয়ে। সেখানে মঞ্চে হাজির ছিলেন উদ্ধবও।
মুখ্যমন্ত্রী পদে মেয়াদ ভাগাভাগির বিষয়টিকে শিবসেনার ‘নতুন শর্ত’ হিসেবে তুলে ধরেন অমিত। এবং জানিয়ে দেন, শিবসেনার ‘নতুন শর্ত’ গ্রহণযোগ্য নয়। সুকৌশলে এ-ও জানিয়ে রাখেন, বিজেপি এই দাবি ‘যথাযথ সময়ে’ বিবেচনা করবে। কংগ্রেস-এনসিপি-শিবসেনা মিলে যে সরকার গড়ার তোড়জোর করছে, তাতে ফাটল ধরাতেই বিজেপি সভাপতির ওই মন্তব্য বলে মনে হচ্ছে।
শিবসেনার সঙ্গে মিলে কংগ্রেস-এনসিপির সরকার গড়ার চেষ্টায় চিড় ধরাতে বিজেপি সভাপতি এ দিন শুনিয়ে দেন, যারা এখন সরকার গড়তে চাইছে, তারা নিজেদের মধ্যেই কথা বলে না। শরদ পওয়ারের দলই গত কাল দুপুরে রাজ্যপালকে জানিয়ে দিয়েছিল, সরকার গড়ার জন্য আরও সময় চাই। এর পর আর রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত রাজ্যপালের অপেক্ষা করার যৌক্তিকতা কী?
চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন অমিত। বলেছেন ‘‘বিরোধীরা শুধু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যে, সরকার গড়ার সময় দেওয়া হয়নি। ছ’মাস সময় আছে। আমি চাই না ফের ভোট হোক। আজও যে কেউ গিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানাতে পারে। তাদের কাছে সংখ্যা নেই। থাকলে সরকার গড়ে নিক।’’ একই সঙ্গে জট ছাড়িয়ে সরকার গড়ার পথ খুলে রাখতে অমিত জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে বিজেপিও সরকার গড়ার দাবি জানাতে পারে।
অমিতের মতে, সরকার গড়তে না-পারায় সব থেকে বেশি লোকসান হয়েছে বিজেপিরই। তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করায় সব থেকে বেশি লোকসান যদি কারও হয়ে থাকে, তা বিজেপির। বিজেপিরই তদারকি সরকার চলে গিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন ফডণবীস। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরে পরিচয় বদলে ফেলেছেন টুইটারে। ‘তদারকি মুখ্যমন্ত্রী’ থেকে হয়েছেন ‘মহারাষ্ট্রের সেবক’।