পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত-উত্তেজনা এবং টানাপড়েন পর্বের মধ্যেই পাকিস্তানকে চারটি সশস্ত্র ড্রোন সরবরাহের প্রক্রিয়া শুরু করে দিল চিন। বলা হচ্ছে, চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডর (সিপিইসি)-এর সুরক্ষার জন্যই এই ড্রোন সিস্টেম পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সশস্ত্র ওই ড্রোনগুলি কী ভাবে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, পাক নৌবাহিনীর ব্যবহারের জন্য উইং লুং টু শ্রেণিভুক্ত অত্যাধুনিক ড্রোন তৈরির পরিকল্পনা আগেই ছকে ফেলেছে ওই দুই দেশ। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত। পুরো বিষয়টি মাথায় রেখে পাল্টা চাপ বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে ভারতও। আমেরিকার থেকে ওই একই ধরনের প্রিডেটর বি শ্রেণিভুক্ত ড্রোন কেনা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
পাকিস্তানকে সশস্ত্র ড্রোনের দুটি সিস্টেম পাঠাচ্ছে বেজিং। প্রতিটি সিস্টেমে দুটি করে ড্রোন এবং একটি গ্রাউন্ড স্টেশন রয়েছে। ওই ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি আক্রমণও চালানো যাবে। ওই ধরনের চিনা ড্রোনগুলি থেকে ১২টি এয়ার টু সারফেস মিসাইল ছোড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ওয়ান বেল্ট-ওয়ান রোড (ওবিওআর) প্রকল্পের আওতায় বিপুল টাকা বিনিয়োগ করে অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করছে চিন। সেই প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে পাকিস্তানও। আপাত ভাবে বলা হচ্ছে, বালুচিস্তান প্রদেশের অশান্তি প্রবণ গাদর এলাকায় নজরদারি চালানোর জন্যই ওই ড্রোন পাঠাচ্ছে চিন। পাশাপাশি গাদর বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বেজিংয়ের বাহিনী। তার নিরাপত্তার জন্যই সশস্ত্র ওই ড্রোনের ব্যবস্থা।
লাদাখে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই বেজিংয়ের এই পদক্ষেপে ভিন্ন কৌশলও দেখছেন অনেকে। গত এক দশকের মধ্যে উইং লুং টু শ্রেণির ওই আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল বহু দেশকেই বিক্রি করে চলেছে বেজিং। কার্যত ড্রোন রফতানিতে এখন শীর্ষে চিন। স্টকহলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৮-র মধ্যে এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার বহু দেশকে মোট ১৬৩টি উইং লুং টু শ্রেণিভুক্ত ড্রোন বিক্রি করেছে চিন। তার মধ্যে রয়েছে কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, আলজেরিয়া, সৌদি আরব এবং আরব আমিরশাহির মতো দেশও।
আরও পড়ুন: গালওয়ান থেকে সেনা সরাচ্ছে চিন, তৈরি হল বাফার জোন
লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা এবং সেই আবহের মধ্যেই পাকিস্তানকে ড্রোন সরবরাহ করার সিদ্ধান্তে তৎপর নয়াদিল্লিও। দীর্ঘ দিন ধরেই আমেরিকার থেকে প্রিডেটর বি শ্রেণিভুক্ত ড্রোন কেনার চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে ভারত। তা নিয়ে ফের নড়াচড়া শুরু হয়েছে। ওই ধরনের ড্রোন নজরদারির পাশাপাশি টার্গেটে আঘাত হানতেও সক্ষম। ওই ড্রোনে রয়েছে মিসাইল এবং লেসার গাইডেড বোমাও। ইরাক, আফগানিস্তান এবং সিরিয়ায় ওই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছিল আমেরিকা।
আরও পড়ুন: হনুমানের লকেট-সহ দেহ তাইওয়ান উপকূলে, সম্বিতের কি?