ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন - ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ বইসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সে রাজ্যের শাসকজোটের নেতারা। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে জেএমএম, আরজেডি, কংগ্রেসের নেতারা মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবটিকে দ্রুত প্রকাশ্যে আনার অনুরোধ জানান। তার পরের দিন শুক্রবারই দিল্লি গেলেন রাজ্যপাল রমেশ বইস।
খনি দুর্নীতি-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তোলে বিজেপি। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল তাঁকে বিধায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজ্যপালকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানান। বিজেপির দাবি, হেমন্ত লাভজনক পদে থেকে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন লঙ্ঘন করছেন।
রাজ্যপাল এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখেন। গত ২৫ অগস্ট পাল্টা চিঠি লিখে নির্বাচন কমিশন তাদের মতামত জানিয়ে দেয়। যদিও মুখবন্ধ খামে থাকা সেই চিঠিতে কী বলা হয়েছে, তা নিয়ে রাজভবনের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু রাজভবনের একটি সূত্রের তরফে দাবি করা হয়, নির্বাচন কমিশনও হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজের প্রস্তাব করেছে। সেই সূত্রের আরও দাবি যে, রাজ্যপাল এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
২৫ অগস্টের পর প্রায় এক সপ্তাহ কাটতে চললেও রাজভবনের তরফে এই নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। ঝাড়খণ্ডের শাসকজোটের দাবি, রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে বিজেপিকে বিধায়ক কেনাবেচায় সুযোগ করে দিতেই রাজ্যপাল মুখবন্ধ খামে ভরা চিঠিটিকে প্রকাশ্যে আনছেন না। বৃহস্পতিবার শাসকজোটের নেতারা রাজ্যপালকে জানান, রাজ্যে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে অবৈধ কোনও উপায়ে ফেলে দেওয়ার প্রচেষ্টা রুখতে তাঁর দ্রুত নির্বাচন কমিশনের চিঠিটি প্রকাশ্যে আনা উচিত। শাসকজোট সূত্রের খবর, রাজ্যপাল তাঁদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনবেন।
এ দিকে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে শক্তি পরীক্ষা দেবে জেএমএম, আরজেডি ও কংগ্রেসের জোট সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠকে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বিধায়ক ‘কেনাবেচা’র মতো আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে, শাসক-বিধায়কদের দ্রুত নিরাপদ রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্যই হেমন্ত সরকারের এই পদক্ষেপ। নিজের দল এবং সরকারকে অটুট রাখতে আপাতত শাসকজোটের বিধায়কদের কংগ্রেস-শাসিত ছত্তীসগঢ়ে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের দিল্লি সফরে তৈরি হয়েছে নয়া জল্পনা।