বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই মার্সিডিজ।
মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক-সহ গাড়ি কারা রাখল তা নিয়ে যখন জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), ঠিক তখনই একটি কালো মার্সিডিজকে ঘিরে রহস্য আরও দানা বাঁধল।
মঙ্গলবার এনআইএ-র আধিকারিকরা মুম্বইয়ের ক্রফোর্ড বাজারের একটি পার্কিং থেকে ওই গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেন। পার্কিং স্থলের অদূরেই মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার অফিস। কয়েক দিন ধরেই গাড়িটি ওখানে দাঁড় করানো ছিল। এনআইএ সূত্রে খবর, গাড়ি থেকে একটি নম্বরপ্লেট উদ্ধার হয়েছে। নম্বরপ্লেটটি অম্বানীর বাড়ির সামনে রাখা স্করপিও গাড়িটির বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও মার্সিডিজ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ৫ লক্ষ টাকা, পেট্রল, ডিজেল, কিছু জামাকাপড় এবং একটি টাকা গোনার যন্ত্র।
এনআইএ-র আইজি অনিল শুক্ল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মার্সিডিজটি ব্যবহার করতেন ধৃত পুলিশ আধিকারিক সচিন বাজ। গাড়িটি কি সচিনের নিজের, নাকি অন্য কারও? সচিনের নিজের যদি না হয়ে থাকে, তা হলে গাড়ির মালিক কে? কেনই বা এখানে পার্ক করে রাখা হয়েছিল? এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবারই সচিনের সাকেত এলাকার বাড়ি থেকে তাঁর একটি ল্যাপটপ, আইপ্যাড, ফোন, ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার এবং সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে এনআইএ। এনআইএ সূত্রে জানানো হয়েছে, যে ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার এবং সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে তা থেকে এই মামলার বেশ কিছু সূত্র পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এমনও তথ্য উঠে আসছে, যে স্করপিওটি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে রাখা হয়েছিল সেই গাড়িটি সচিনের আবাসনে দেখা গিয়েছিল।
ফলে স্করপিও এবং সেই গাড়ির মালিক মনসুখ হিরণের রহস্যজনক মৃত্যু এবং তার পরই কালো মার্সিডিজ থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিস— সব সূত্রকে এক সঙ্গে গেঁথে এই মামলার সঙ্গে সচিন বাজের জড়িয়ে থাকার কতটা সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আর কী কী সূত্র জড়িয়ে রয়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে এনআইএ।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে একটি পরিত্যক্ত স্করপিও উদ্ধার হয়েছিল। তাতে ২০টি জিলেটিন স্টিক এবং একটি হুমকি চিঠি পাওয়া গিয়েছিল। তার পরই তদন্তে নেমে মুম্বই পুলিশ জানতে পারে গাড়িটি মনসুখ হিরণ নামে এক ব্যবসায়ীর। এ নিয়ে তদন্ত চলাকালীনই গত ৫ মার্চ মনসুখের দেহ উদ্ধার হয় একটি জলাশয় থেকে। তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। তারা তদন্ত শুরু করতেই এই ঘটনায় সচিনের নাম সামনে আসে। এর পরই গত শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার সঙ্গে সচিনের কী যোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।