মাঝে মাত্র আর একটা দিন। তার পরই জনসাধারণের জন্য খুলে যাবে দেশের দীর্ঘতম দোতলা ব্রিজ। ২৫ ডিসেম্বর ব্রিজটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক নজরে জেনে নেওয়া যাক এই ব্রিজটির সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
নাম বগিবিল সেতু। অসমের ডিব্রুগড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তৈরি করা হয়েছে সেতুটি।
এটি দেশের দীর্ঘতম দোতলা ব্রিজ। দৈর্ঘ৪.৯৪ কিলোমিটার। ব্রিজটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৫৯২০ কোটি টাকা।
১৯৯৭ সালে বগিবিল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। ২০০২-এ রেলের ছাড়পত্র পাওয়ার পরই নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২১ বছর সময় লেগেছে ব্রিজটি তৈরি করতে।
আধুনিক স্থাপত্য ও প্রযুক্তির মিশেলে ব্রহ্মপুত্রের উপর তৈরি করা হয়েছে বগিবিল সেতুকে। দোতলা এই ব্রিজের উপরের তলা দিয়ে চলবে বাস, লরি, ট্রাক ইত্যাদি যানবাহন। আর নীচ দিয়ে চলবে ট্রেন।
যান চলাচলের জন্য বগিবিল সেতুতে তিনটি লেন রয়েছে। আর ট্রেন চলাচলের জন্য রয়েছে ডাবল লাইন।
অসমের ডিব্রুগড় জেলার সঙ্গে ধেমাজি জেলার সংযোগস্থাপন করেছে এই বগিবিল সেতু। এই সেতুর কারণে দুই জেলার মধ্যে রেলপথে দূরত্ব ৫০০ কিলোমিটার থেকে কমে দাঁড়াচ্ছে মাত্র ১০০ কিলোমিটার। রেল সফরের সময়ও কমবে প্রায় ১০ ঘণ্টা।
নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের (এনইএফআর) অধীনে তৈরি হয়েছে বগিবিল সেতু। এনইএফআর-এর মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মার দাবি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর নির্মাণ শিল্পের এক অনন্য নজির এই বগিবিল সেতু।
দীর্ঘায়ুর জন্য ব্রিজটিতে ইলেকট্রিক আর্ক ওয়েল্ডিং টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। ১২০ জন ইঞ্জিনিয়ার এবং ৩০০ ইউরো-সার্টিফায়েড ওয়েল্ডারের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই বগিবিল।
কোনও নাট-বোল্ট ব্যবহার করা হয়নি সেতুর স্টিলের কাঠামোটি তৈরি করতে। পুরোটাই ওয়েল্ডিংয়ের উপর দাঁড়িয়ে। যা দেশের মধ্যে প্রথম।
রিখটার স্কেলে ৭ তীব্রতার ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে ব্রিজটির।
অসমে ব্রহ্মপুত্রের উপর এটি চতুর্থ রেল-রোড ব্রিজ। অসম-অরুণাচল সীমান্ত থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এই ব্রিজ।
সীমান্তের খুব কাছাকাছি হওয়ায় অবস্থানগত দিক থেকে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ভারত-চিন সীমান্তেসেনা সরঞ্জামও অস্ত্রপৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ব্রিজ গুরুত্বপূর্ণভূমিকা নেবে।