নভজ্যোত সিংহ সিধু ও অমরেন্দ্র সিংহ ফাইল চিত্র
ফের গোলমাল শুরু হয়ে গেল অমরেন্দ্র সিংহ ও নভজ্যোত সিংহ সিধুর। এ বার পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দুই পরামর্শদাতার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এক কদম এগিয়ে, সিধুর এই পরামর্শদাতাদের নিয়ে এআইসিসিকে আত্মসমালোচনা করার জন্য বলেছেন অমরেন্দ্র শিবিরের নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি। এই গোলমালের মধ্যেই অবশ্য আজ সকালে পঞ্জাবের আখ চাষিদের প্রাপ্য নিয়ে অমরেন্দ্রের সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি সিধু। সব মিলিয়ে ভোটের মুখে পঞ্জাবের কংগ্রেস সেই কংগ্রেসেই।
অনেক টানাপড়েনের পর সিধুর পদগ্রহণের অনুষ্ঠানে অমরেন্দ্রের উপস্থিতি পঞ্জাবের কংগ্রেসি রাজনীতিতে সাময়িক সন্ধির বাতাররণ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে সিধুর নিয়োগ করা দুই পরামর্শদাতার মন্তব্যকে ঘিরে। এ মাসের ১১ তারিখ প্যায়ারেলাল গর্গ ও মালবেন্দ্র মালিকে পরামর্শদাতা নিয়োগ করেছেন সিধু। তার পরেই বিতর্ক। একটি ফেসবুক পোস্টে মালি লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীর কাশ্মীরিদেরই। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবের বিপরীতে গিয়ে ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর দখল করেছে। কাশ্মীর যদি ভারতের অংশ হয়ে থাকে, তা হলে অনুচ্ছেদ ৩৭০ কিংবা ৩৫-এ-র কী প্রয়োজন ছিল?’’ তালিবানকে নিয়ে একটি পোস্টে সিধুর পরামর্শদাতা লিখেছেন, ‘‘এখন শিখ ও হিন্দুদের রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। অতীতের মতো নয়, দেশের উন্নতির জন্য এখন চেষ্টা করবে তারা।’’ জুন মাসে সমাজমাধ্যমে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীকে নিয়ে একটি স্কেচ প্রকাশ করেছিলেন মালে। তাতে দেখানো হয়েছিল, মানুষের কঙ্কালের পাহাড়ের পাশে দাঁড়িয়ে ইন্দিরা। ওই পোস্টে মন্তব্য ছিল, ‘‘সব দমনপীড়নেরই শেষ হয়।’’ একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্কেচটি ১৯৮৯ সালে পঞ্জাবের একটি ম্যাগাজিনে প্রচ্ছদ হিসেবে ছাপা হয়েছিল। অন্য দিকে, সিধুর আর এক পরামর্শদাতা প্যায়ারেলাল গর্গ পাকিস্তান সম্পর্কে অমরেন্দ্রের সমালোচনা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
গত কালই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান অমরেন্দ্র। তাঁর কথায়, এমন কথাবার্তা পঞ্জাব কিংবা গোটা দেশের পক্ষে বিপজ্জনকই শুধু নয়, এ সব ভারত সরকার ও কংগ্রেসের অবস্থানের পুরোপুরি বিরোধী। সিধুর উদ্দেশে ক্ষুব্ধ অমরেন্দ্র বলেছেন, ভারতের আরও ক্ষতি হওয়ার আগে তিনি যেন তাঁর পরামর্শদাতাদের সংযত করেন। মনীশ তিওয়ারিও বিষয়টি আজ পঞ্জাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়তের নজরে এনেছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘যাঁরা জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের অংশ মনে করেন না কিংবা পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে রয়েছেন, তাঁরা কংগ্রেসের অংশ হতে পারেন কি না, তা আপনাদের ভেবে দেখতে হবে। যাঁরা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন, এ সব তাঁদের অপমান।’’ বিতর্কের মধ্যেই আজ দুই পরামর্শদাতাকে পাটিয়ালায় নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান সিধু। বিষয়টি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
তবে আজই সিধু টুইটে লিখেছেন, ‘‘আখ চাষিদের সমস্যার দ্রুত সমাধান খোঁজা হোক। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, পঞ্জাবে চাষের জন্য খরচ বেশি হলেও এ রাজ্যের চাষিদের হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের তুলনায় কম টাকায় আখ বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ এই বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলে কার্যত অমরেন্দ্রকে খোঁচা
দিয়েছেন সিধু।