প্রতীকী ছবি।
গত বাজেটের চেয়ে শিক্ষা খাতে এ বার বরাদ্দ প্রায় ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর তার একটা বড় অংশই উচ্চশিক্ষায় খরচের পরিকল্পনা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
চলতি বাজেটে উচ্চ শিক্ষা খাতে ৯৪,৫৮৩.৬৪ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক আজ জানান, এই বরাদ্দ গত বারের চেয়ে অন্তত ১৩ শতাংশ বেশি। মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই বরাদ্দের মধ্যে ৫৬,৫৩৬.৬৩ কোটি টাকা খরচ হবে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে। উচ্চশিক্ষার বাজেট ধরা হয়েছে ৩৮,৩১৭.০১ কোটি টাকা।
নির্মলা আজ দাবি করেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে জোর দিয়েছে মোদী সরকার। এর সুফল হিসেবেই বর্তমান বছরে বিশ্বের নামজাদা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ভারতের তিনটি প্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে।’’ আজ বাজেটে জানানো হয়েছে, ‘ইন্সটিটিউট অব এক্সেলেন্স’-এর তকমা পাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। নির্মলা বলেন, ‘‘বিশ্বমানের ওই প্রতিষ্ঠানগুলিতে যাতে গোটা পৃথিবীর পড়ুয়ারা আসেন, সে জন্য ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’’ গবেষণায় জোর দিতে আজ ‘জাতীয় রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ গঠনের ঘোষণা করেন নির্মলা। গবেষণার মান বৃদ্ধি ও গবেষণায় নকল রুখতে কাজ করবে ওই সংস্থা। দেশের আইআইটিগুলির জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৪০৯.৯৫ কোটি টাকা, আইআইএম এবং ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স, এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের জন্য বরাদ্দ হয়েছে যথাক্রমে ৪৪৫.৫৩ কোটি ও ৮৯৯.২২ কোটি টাকা।
শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। কিন্তু প্রায়ই শিক্ষা সংক্রান্ত নীতি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে কেন্দ্র ও রাজ্য। বিষয়টি মাথায় রেখে একটি শীর্ষ সংস্থা গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। রাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ নামের ওই সংস্থাটি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এক দিকে যেমন সেতুর মতো কাজ করবে, তেমনি সমস্ত উচ্চশিক্ষার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রশ্নে নিয়ামক সংস্থা হিসাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী নিশঙ্ক।
প্রাথমিক শিক্ষায় রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে বিবাদের একটি বড় কারণ মিড-ডে মিল খাতে বরাদ্দের পরিমাণ। অধিকাংশ রাজ্যের অভিযোগ, ওই খাতে যা টাকা দেওয়া হয় তা যথেষ্ট নয়। বরাদ্দ বৃদ্ধির হারও নামমাত্র। চলতি বাজেটে ওই খাতে বরাদ্দ ৯,৯৪৯ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা করেছে কেন্দ্র। তবে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে গোটা দেশের জন্য মাত্র এক হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ বৃদ্ধি আদৌ যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে রাজ্যগুলি। বিশেষ করে নতুন শিক্ষানীতিতে যে পড়ুয়াদের দুপুরের খাবারের পাশাপাশি সকালের প্রাতরাশ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, তা ওই সামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধিতে রূপায়ণ করা কার্যত অসম্ভব বলে মানছেন মন্ত্রকের কর্তারাও। বিষয়টির সঙ্গে যে হেতু দেশের ভবিষ্যত জড়িত, তাই বাজেট বিতর্কে ওই খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিতে সরব হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকের মতো বিরোধী দলগুলি।