বিধায়ক ‘নিখোঁজ’, ১০০ কোটির টোপ, মন্ত্রিত্বের প্রলোভন... জমাট নাটক কর্নাটকে

নবনির্বাচিত তিন বিধায়ক রাজশেখর পাতিল, নগেন্দ্র সিংহ এবং আনন্দ সিংহের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্ব যোগাযোগই করে উঠতে পারছে না বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। এঁদের মধ্যে নগেন্দ্র এবং আনন্দ অনেক দিন থেকেই বিজেপির রেড্ডি ভাইদের ঘনিষ্ঠ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ১৩:৩২
Share:

কর্নাটকের কুর্সি যেন নাগরদোলার মতো ঘুরপাক খাচ্ছে দু’পক্ষের নাকের ডগা দিয়ে। এক দিকে বিজেপি, অন্য দিকে কংগ্রেস-জেডি(এস)— দু’তরফের মরিয়া দড়ি টানাটানির খেলার মধ্যে উঠে পড়েছে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র অভিযোগও। এর মধ্যেই কংগ্রেস এবং জেডি(এস)-এর কয়েকজন নবনির্বাচিত বিধায়ককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর। সব মিলিয়ে, মঙ্গলবারের ত্রিশঙ্কু ফলফলের জেরে, কর্নাটকে সরকার গঠন ঘিরে নাটক এখনও জমজমাট।

Advertisement

বুধবার আবারও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছে বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। কংগ্রেস আর জেডি(এস)-ও একই দাবি নিয়ে যাচ্ছে রাজভবনে। কর্নাটকের রাজ্যপাল অবশ্য এখনও কাউকে সরকার গড়তে ডাকেননি। কিন্তু এর মধ্যেই জেডি(এস) নেতা, এবং দেবগৌড়ার ছেলে, এইচ ডি কুমারস্বামীর অভিযোগ, বিজেপি তাঁদের বিধায়কদের এক-একজনকে ১০০ কোটি টাকা করে ঘুষ দিয়ে কিনে নেওয়ার খেলায় নেমেছে। কাউকে কাউকে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিত্বের টোপও।

কংগ্রেস আর জেডি(এস) মঙ্গলবার থেকেই নিজেদের জয়ী প্রার্থীদের এক জায়গায় এনে ঘর বাঁচানোর চেষ্টায় মরিয়া। কিন্তু এর মধ্যেই দুই দলের কয়েকজন বিধায়ক ‘নিখোঁজ’ বলে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর।

Advertisement

আরও পড়ুন: কংগ্রেস-জেডিএস জোট বাঁধার অঙ্কে ত্রিশঙ্কু নাটক কর্নাটকে

নবনির্বাচিত তিন বিধায়ক রাজশেখর পাতিল, নগেন্দ্র সিংহ এবং আনন্দ সিংহের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্ব যোগাযোগই করে উঠতে পারছে না বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। এঁদের মধ্যে নগেন্দ্র এবং আনন্দ অনেক দিন থেকেই বিজেপির রেড্ডি ভাইদের ঘনিষ্ঠ।

জেডি(এস) শিবির থেকেও বিধায়ক ‘হারানো’র খবর মিলছে। বেঙ্গালুরুর পাঁচতারা হোটেলে মিটিং ডেকেছিলেন কুমারস্বামী। সেখানে দুই বিধায়ক রাজা বেঙ্কটাপ্পা নায়ক এবং বেঙ্কট রাও নাড়াগৌড়া অনুপস্থিত ছিলেন বলে খবর।

এর মধ্যেই নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়ক আমারেগৌড়া লিঙ্গানাগৌড়া পাতিল বায়্যাপুর-এর দাবি, বিজেপি তাঁকে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিয়েছে। “বিজেপি নেতাদের থেকে ফোন পেয়েছি। ওরা বলেছে আমাদের সঙ্গে এসো, তোমাকে একটা মন্ত্রিত্ব দেব। কিন্তু আমি এখানেই (কংগ্রেসেই) থাকব”— বলেছেন তিনি।

কর্নাটকে ২২৪ আসনের মধ্যে ২২২টি আসনে ভোট হয় গত ১২ মে। ভোট গণনা হয় মঙ্গলবার, ১৫ মে। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে এই মুহূর্তে লাগবে অন্তত ১১২ বিধায়কের সমর্থন। কিন্তু কোনও দলই এই ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি।

বিজেপি ১০৪টি আসলে জিতেছে। তারা ম্যাজিক ফিগার থেকে ৮টি আসন দূরে। কংগ্রেস জিতেছে ৭৮টিতে। ৩৭টি আসনে জিতেছে ডেডি(এস)। ডেডি(এস)-এর জোটসঙ্গী বিএসপি পেয়েছে একটি আসন। কংগ্রেস-জেডি(এস)-বিএসপি মোট পেয়েছে ১১৬টি আসন। অর্থাত্ ম্যাজিক ফিগারের থেকে চারটে বেশি। অন্যান্য দল এবং নির্দল দু’টি আসনে জিতেছে। এই দুজন সমর্থন দিলেও বিজেপি-র পক্ষে সরকার গড়া অসম্ভব। একমাত্র দল ভাঙিয়েই বিজেপির পক্ষে কুর্সিদখল সম্ভব।

আপাতত বল রয়েছে রাজ্যপাল ভাজুভাই ভালার কোর্টে। তবে কংগ্রেস হুমকি দিয়ে রেখেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের জোটকে না ডেকে যদি বিজেপি-কে সরকার গড়তে ডাকেন রাজ্যপাল, তবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে তারা। এর আগে গোয়া আর মণিপুরের ভোটে কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল হয়েও সরকার গড়ার ডাক পায়নি রাজভবন থেকে। বিজেপি কম আসনে জিতেও অন্যান্যদের সমর্থন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার তালিকা সংস্লিষ্ট রাজ্যপালদের দেয়। এবং তার ভিত্তিতে কংগ্রেসের বদলে বিজেপি-কে ওই দুই রাজ্যে সরকার গড়তে ডাকেন রাজ্যপালরা। ওই দুই ঘটনাই এখন কংগ্রেসের হাতে বড় হাতিয়ার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement