বফর্সের পরে ফের অস্ত্র কেনাবেচা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াল গাঁধী পরিবারের। ইনি অবশ্য বিজেপির গাঁধী। মেনকা গাঁধী-পুত্র ও উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরের সাংসদ বরুণ। আশির দশকে রাজীব গাঁধীর নাম জড়িয়েছিল বফর্স কামান কেনার ক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে। আর বরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিদেশি যৌনকর্মীদের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য অস্ত্র বিক্রি সংস্থার দালাল অভিষেক বর্মার কাছে পাচার করে দিয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে এই অভিযোগে অস্বস্তিতে বিজেপি। বরুণ বিষয়টি নিয়ে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। আজ দিল্লির প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ আনেন স্বরাজ অভিযান দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত ভূষণ ও যোগেন্দ্র যাদব। দুই নেতা আজ সাংবাদিকদের সামনে বরুণের সরাসরি নাম করেননি। কেবল জানান, ইউপিএ আমলে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য ছিলেন এক বিজেপি সাংসদ। তিনিই বিদেশি যৌনকর্মীদের ফাঁদে পড়ে তথ্য ফাঁস করেছিলেন।
তবে ভূষণ ও যোগেন্দ্র যে নথিপত্র সাংবাদিকদের হাতে তুলে দিয়েছেন তাতে একাধিক বার উল্লেখ রয়েছে বরুণ গাঁধীর। দুই নেতার অভিযোগ, প্রতিরক্ষা দালালেরা এখনও সক্রিয় রয়েছে। যারা শুধু বরুণই নয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পদস্থ কর্তাদের মূলত বিদেশি যৌনকর্মীদের মাধ্যমে হাত করে গোপন তথ্য সংগ্রহ করছে।
কী ভাবে ফাঁস হল এই অভিযোগ?
ভূষণ ও যোগেন্দ্র জানান, আইনজীবী এডমন্ড অ্যালেন প্রথমে অভিষেক বর্মার সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু পরে তথ্য ফাঁস নিয়ে সরব হন তিনি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা একটি চিঠিতে এডমন্ড জানান, ‘‘অভিষেক ২০০০ সাল থেকে বরুণ গাঁধীকে চেনেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি বরুণের সঙ্গে বিদেশি যৌনকর্মীদের আলাপ করিয়ে দিয়েছেন।’’ ভূষণদের দাবি, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ কেন্দ্রের শীর্ষ কর্তাদের কাছে এই বিষয়ে প্রমাণ পাঠানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং অভিষেক বর্মা যে সংস্থার হয়ে কাজ করেন তাদের কাছ থেকেই স্করপেন ডুবোজাহাজ কেনা হয়েছিল। যে স্করপেনের তথ্য ফাঁস হওয়ায় বিস্তর ভুগতে হয়েছে দেশকে। আবার রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তিতেও ওই সংস্থা জড়িত। রাফাল চুক্তির দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন ভূষণরা।
উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে নিজের কেন্দ্র সুলতানপুরে ব্যস্ত রয়েছেন বরুণ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অভিযোগই অবাস্তব। সাংবাদিক বৈঠকে কোনও প্রমাণ পেশ করা হয়নি।’’ বরুণের কথায়, ‘‘সকলেই জানেন প্রতিরক্ষা কমিটিতে গোপন তথ্য নিয়ে আলোচনা হয় না। ২০০২ সালে লন্ডনে পড়া র সময়ে শেষ বার অভিষেক বর্মার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। দুই পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক সূত্রেও পরিচয় রয়েছে। আমি ফৌজদারি মানহানি মামলা করব।’’
আরও খবর...