Rape Case Hearing

প্রেম ভাঙলেই এফআইআর? প্রশ্ন ইলাহাবাদ হাই কোর্টের, ধর্ষণ মামলায় জামিন মঞ্জুর অভিযুক্তের

আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই বিষয়টি ক্রমবর্ধমান ভাবে লক্ষণীয় যে, ব্যক্তিগত বিরোধকে ফৌজদারি আইনপ্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধের রং দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৫৪
Share:
Allahabad High Court grants bail to accused, said that breakups leading to FIRs

প্রেম ভাঙলেই এফআইআর? প্রশ্ন ইলাহাবাদ হাই কোর্টের —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

বিচ্ছেদ হলেই সঙ্গীর বিরুদ্ধে এফআইআর! এক ধর্ষণ মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ ইলাহাবাদ হাই কোর্টের। অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতি কৃষ্ণ পাহাল ফৌজদারি আইনের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৯ এপ্রিল ইলাহাবাদ হাই কোর্টে একটি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই বিষয়টি ক্রমবর্ধমান ভাবে লক্ষণীয় যে, ব্যক্তিগত বিরোধকে ফৌজদারি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধের রং দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভেঙে গেলেই এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।’’

৪২ বছর বয়সি বিবাহিত এক ব্যক্তি গত বছর ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন। ২৫ বছর বয়সি এক যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যুবতীর অভিযোগ ছিল, ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। পরে সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। তাঁকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেন অভিযুক্ত। শুধু তা-ই নয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে তা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত।

Advertisement

যুবতীর আরও অভিযোগ, অভিযুক্ত একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতেন। অতীতে তিনি তিনটে বিয়েও করেছেন। যুবতীর দাবি, অভিযুক্ত ধনী। টাকা এবং প্রভাব খাটিয়ে তাঁর জীবন নরকে পরিণত করে দিয়েছিলেন। অভিযোগকারিণীর দাবির পাল্টা যুক্তি হিসাবে অভিযুক্তের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল বিবাহিত জেনেও যুবতী সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তবে মক্কেলের তিনটি বিয়ের দাবি অস্বীকার করেন অভিযুক্তের আইনজীবী।

সওয়াল-জবাব শেষে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই মামলা যতটা না অপরাধমূলক অন্যায় সংক্রান্ত, তার চেয়েও বেশি বিচ্ছেদের পর আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল! নির্দেশ দেওয়ার সময় আদালত আরও উল্লেখ করে, ওই সম্পর্কটি দু’জনের সম্মতিতে হয়েছিল। অভিযোগকারিণী ওই ব্যক্তির পূর্ববর্তী বিয়ের কথা জানতেন।

ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের একাধিক মামলায় সম্প্রতি ইলাহাবাদ হাই কোর্ট বেশ কয়েকটি বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ করে। সেই সব পর্যবেক্ষণে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্টও। গত মাসে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট এক ধর্ষণ মামলায় রায় দেওয়ার সময় মন্তব্য করে, নির্যাতিতা নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন। দায় তাঁরই! সেই মন্তব্যের জন্য ইলাহাবাদের উচ্চ আদালতকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য ছিল, এই ধরনের মন্তব্য করা উচিত হয়নি। হাই কোর্ট যা বলেছে তা ‘অত্যন্ত অসংবেদশীল’ বলেও মনে করে সুপ্রিম কোর্ট।

গত ১৭ মার্চ ইলাহাবাদ হাই কোর্ট অন্য একটি মামলায় ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে। কিশোরীর বুকে হাত দিলে বা তার পাজামার দড়ি খোলার চেষ্টা করলে তা ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা নয় বলে রায় দিয়েছিল ইলাহাবাদের উচ্চ আদালত। তা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। সে বার হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি গবইয়ের বেঞ্চ। তারা জানায়, হাই কোর্টের নির্দেশে তারা ব্যথিত। এতে ‘সম্পূর্ণ ভাবে সংবেদশীলতার অভাব’ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement