—ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনও রকম পদক্ষেপ করতে পারে ভারত— ইঙ্গিত দিলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। নিয়ন্ত্রণরেখায় রোজ গোলাগুলি এবং উপত্যকায় চলতে থাকা অশান্তি প্রসঙ্গে মুখ খুলে মঙ্গলবার ফের পাকিস্তানের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। অত্যন্ত কঠোর বার্তা দিয়ে জেনারেল রাওয়াতের মন্তব্য, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব রকম পদক্ষেপের পথ খোলা। নিয়ন্ত্রণরেখায় এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সব রকম পদক্ষেপ’-এর জন্য প্রস্তুত থাকার বিষয়ে সে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর।
গত সপ্তাহেই জেনারেল বিপিন রাওয়াত জম্মু-কাশ্মীর সফর করেছেন। নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বিশদ তথ্য নিয়েছেন। উপত্যকায় চলতে থাকা অশান্তি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ করা উচিত, আলোচনা করেছেন তা নিয়েও। কাশ্মীরের পরিস্থিতি মোকাবিলার কৌশল স্থির করতে শ্রীনগরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকেও বসেছিলেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তান যে ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখায় অশান্তি বাড়িয়ে তুলছে এবং উপত্যকায় জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তাতে ভারতীয় বাহিনীকে আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে হবে বলে বৈঠকে নাকি আলোচনা হয়েছে। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যম এই খবর জানিয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যে কোনও রকম পদক্ষেপ করতে পারে, সব রকমের পদক্ষেপের জন্যই বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে— উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সেনাপ্রধান নাকি এমন বার্তাই দিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীর সফরের সময় রাজ্যপাল এন এন ভোরার সঙ্গেও দেখা করেন জেনারেল রাওয়াত। উপত্যকার পরিস্থিতি এবং তা মোকাবিলার কৌশল সম্পর্কে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা হয় সেনাপ্রধানের।
আরও পড়ুন: কাবুলে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রকেট হামলা, নিশানায় শান্তি সম্মেলনও
উপত্যকায় গরমের মরসুম আসায় বিভিন্ন গিরিপথের বরফ ক্রমশ গলছে। সেই সব গিরিপথ দিয়েই এ বার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি শিবিরগুলো থেকে উপত্যকায় জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা শুরু করেছে পাক সেনা। প্রতি বছরই জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য এই সময়কেই বেছে নেয় পাকিস্তান। কিন্তু অনুপ্রবেশ রুখতে ভারতীয় বাহিনী অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছে এ বার। যার জেরে নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রায় রোজ গোলাগুলি চলছে। এই পরিস্থিতিও যে ভারত অনন্ত কাল জিইয়ে রাখতে চায় না, সেনাপ্রধানের মন্তব্যে তার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। ভারত যে এ বার কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যেই এগোবে, সে বার্তা কেন্দ্রীয় সরকারও ইতিমধ্যেই দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব রকম পদক্ষেপের পথ খোলা রয়েছে বলে যে মন্তব্য সেনাপ্রধান করলেন, তাকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।