প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি বিমান থেকে হেলিকপ্টার, দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে বিভিন্ন রাজ্যের সভাস্থল, শিল্পপতিদের অনুদান থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, সরকারি সভামঞ্চ থেকে সরকারি প্রকল্প— ভোটের প্রচারের জন্য যেখানেই হাত দিতে চাইছে রাহুল গাঁধীর দল, আগেই সে সব ‘কব্জা’ করে বসে আছে বিজেপি।
লোকসভা ভোটের প্রচার কৌশল ঠিক করতে আনন্দ শর্মার নেতৃত্বে কমিটি গড়েছেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু প্রচারের খুঁটিনাটি স্থির করতে গিয়ে কংগ্রেস দেখছে, সিংহভাগ ক্ষেত্র দখল করে আছে বিজেপি। কোনও রাখঢাক না করেই আনন্দ শর্মা আজ বলেন, ‘‘এ এক অসম লড়াই। নেতাদের প্রচারের জন্য বিমান, হেলিকপ্টারও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচারে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে বিজেপি। এর উপরে লোকসানে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে দিয়েও বিজ্ঞাপন দেওয়ানো হচ্ছে। বিরোধীদের তুলোধোনা করার কাজে সরকারি মঞ্চকেও ব্যবহার করছেন নরেন্দ্র মোদী। আজ প্রবাসী ভারতীয় দিবসের মতো সরকারি মঞ্চে খোলাখুলি রাজীব গাঁধীর সমালোচনা করেছেন তিনি।’’ খোদ রাহুলও আজ মোদীকে একহাত নেন টুইটে। ২০১৫ সালে ঘটা করে ‘বেটি বচাও বেটি পঢ়াও’ অভিযান শুরু করেছিলেন মোদী। দেখা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত ৬৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই প্রকল্পে। তার ৫৬ শতাংশই খরচ হয়েছে মোদীর ঢাক পেটাতে। টুইটে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘মোদী বাঁচাও, বিজ্ঞাপন চালাও।’’
ক’দিন আগেই মোদী বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের কাছে অর্থশক্তি, আর বিজেপির আছে জনশক্তি।’ কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও বিজেপির পাল্লা বেশ ভারী। মোদী সরকারের চালু করা ‘নির্বাচনী বন্ড’ যা বিক্রি হয়েছে, তার ৯৫ শতাংশই গিয়েছে তাদের ঝুলিতে। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হিসেব বলছে, শিল্পপতিদের অনুদানের ৯৩ শতাংশই পেয়েছে তারা। কর্পোরেট সংস্থাগুলির সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতের টাকা যে ভাবে সর্দার পটেলের মূর্তি বা গোশালা তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে সিএজি-ও।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘গোটা সরকারিতন্ত্রকে ব্যবহার করছে ওরা। সঙ্গে বিজেপির নিজের অর্থ তো আছেই। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে জয়ের পর তা-ও কিছুটা আশা জাগছে কংগ্রেসের। রাহুলের সফরের দৌলতে বিদেশ থেকেও কিছু সাহায্য আসছে। লড়াইটা তবু অসম।’’’ কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির নরসিংহ রাও বলেন, ‘‘যা অর্থ আসছে, তা যথা সময়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়। অন্য দলের কী আপত্তি থাকতে পারে?’’