গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
বিহারের মুজফ্ফরপুর হোমে ৩৫ নাবালিকার ধর্ষণ ও খুন-কাণ্ডে নয়া মোড়। সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিবিআইয়ের দাবি, ওই হোমের কোনও নাবালিকা খুন হয়নি। বরং তারা প্রত্যেকেই জীবিত।
বুধবার সিবিআইয়ের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেনুগোপাল শীর্ষ আদালতকে জানান, মুজফ্ফরপুরের ‘শেল্টার হোম’-এ যে ৩৫ জন নাবালিকা নিখোঁজ বলে অভিযোগ উঠেছিল, তাদের সকলেই জীবিত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি এসএ বোবডের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিবিআই জানতে পেরেছে, ওই মেয়েরা জীবিত রয়েছে। কেউই খুন হয়নি।’’
বেনুগোপাল আরও জানিয়েছেন, মুজফ্ফরপুর হোম থেকে উদ্ধার কঙ্কাল ও হা়ড়গোড় আসলে কোনও নাবালিকার নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ওই কঙ্কাল ও হাড়গোড়ের ফরেন্সিক পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে, সেগুলি কোনও নাবালিকার নয়। যে হাড়গোড় মিলেছে, তার মধ্যে একটি পুরুষের কোমরের নীচের অংশের এবং অন্যটি একটি মহিলার।’’
আরও পড়ুন: ‘সপাটে থাপ্পড় কষিয়েছি’, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আমেরিকাকে কটাক্ষ খামেনেইয়েরর
২০১৮-র মে মাসে ওই মুজফ্ফরপুর-সহ বিহারের মোট ১৭টি হোমের আবাসিক মেয়েদের উপর ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছিল। একটি সামাজিক সমীক্ষার রিপোর্টে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছিল টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিআইএসএস)। সেই সঙ্গে আরও অভিযোগ উঠেছিল যে ওই নাবালিকাদের ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের পর খুন করে হোম চত্বরে পুঁতে রাখা হয়েছিল। টিআইএসএস-এর ওই রিপোর্ট প্রকাশের পরই শুধুমাত্র মুজফ্ফরপুর হোমের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। বাকি ১৬টি হোমের বিরুদ্ধে সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সে সময় সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল সিবিআই।
আরও পড়ুন: ‘সুপ্রিম কোর্টের উচিত সিএএ বাতিল করা’, মন্তব্য অমর্ত্য সেনের
এ দিন আদালতের কাছে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, আবাসিকদের উপর ধর্ষণ ও যৌন অত্যাচারের তদন্তের পর বিহারের ১৩ হোমের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তরফে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে বাকি চারটি হোমের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। ফলে সেই কেস বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেণুগোপালের দাবি, মুজফ্ফরপুরের ৩৫ জন নাবালিকাকে বেঙ্গালুরু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস (এনআইএমএইচএএনএস)-এ পাঠানো হয়েছিল। তাদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মুজফ্ফরপুর-কাণ্ডে সিবিআই রিপোর্ট গ্রহণ করে গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বেণুগোপালের এই বিবৃতি নিয়ে কোনও রকম সন্দেহের অবকাশ নেই। যদিও বিরোধী পক্ষের আইনজীবী অপর্ণা ভট্টের দাবি, তাঁকে সিবিআই রিপোর্টের কপি দেওয়া হয়নি। ফলে এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। কেন তা করা হয়নি, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সুপ্রিম কোর্ট।