অনুষ্ঠানগৃহে শীতাতপ যন্ত্র বিগড়েছে। তাই হাতপাখাই ভরসা। দিল্লিতে অ্যালেইদা। নিজস্ব চিত্র
বাবার মতো তিনিও এক বার কলকাতা গিয়েছিলেন। সে বাইশ বছর হয়ে গেল। এ বার ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। দিল্লি সেরে যাচ্ছেন কেরল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই তাঁর। তবে চান, আবার বামপন্থা ফিরে আসুক। তাতে আখেরে সমাজের লাভ হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
কিউবার প্রবাদপ্রতিম কবি হোসে মার্তির কবিতা পড়ার পরে দৃপ্তকণ্ঠে হল কাঁপিয়ে গেয়ে উঠলেন, ‘‘আমার কাছে সব সময় দু’টি সাদা গোলাপ থাকে। একটি মিত্রকে দেওয়ার জন্য। অন্যটি, শত্রুকেও!’’
তিনি চে গেভারা-র কন্যা অ্যালেইদা গেভারা।
কিউবা বিপ্লবের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘ন্যাশনাল কমিটি অব সলিডারিটি উইথ কিউবা’ এবং ‘অল ইন্ডিয়া পিস অ্যান্ড সলিডারিটি অর্গানাইজেশন’-এর আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সাক্ষাৎকার দিলেন দোভাষীকে পাশে নিয়ে। গোটা দেশে বামেদের কোণঠাসা হয়ে পড়া প্রসঙ্গে জানালেন, ‘‘ভারতবাসী কী ভাবে ভোট দেবেন, সেটা নিয়ে তো আমাদের কিছু বলা সাজে না। কিন্তু বামেরা শক্তিশালী হলে সমাজের ভাল।’’ চে গেভারা ভারতে এবং বাংলায় এক ‘যুবা আইকন’ বিশেষ। এ বিষয়ে কিছু বলবেন? সম্ভবত বয়সের কারণে চেহারা কিছুটা ভারী হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুখের গড়নে চে স্পষ্ট। বলছেন, ‘‘চে মানুষের মনে রয়ে গিয়েছেন। থাকবেনও। তিনি একটা ভাল পৃথিবীর জন্য আজীবন লড়ে গিয়েছেন। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।’’
ষাট বছর আগে ভারত সফরে এসেছিলেন চে। অ্যালেইদার কথায়, ‘‘তিনি এসে এই দেশের সংস্কৃতির আঁচ নিয়ে গিয়েছিলেন। কলকারখানার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আজ আমি এসেছি। চে নেই। কিন্তু তাঁর মতো অনেক নারীপুরুষ রয়েছেন। যাঁরা অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছেন।’’ জানালেন, ভারত সম্পর্কে প্রবল আগ্রহ রয়েছে কিউবায়। প্রতি শুক্রবার সেখানকার চ্যানেলে ভারতীয় ছবি দেখানো হয়।
ভারতের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে চান এই লড়াকু কন্যা। পেশায় ডাক্তার এবং সমাজকর্মী অ্যালেইদা যখন ৬ বছরের, তখন তাঁর বাবা নিহত হন বলিভিয়ার জঙ্গলে। জানালেন, বাবার স্মৃতি কিছু কিছু রয়েছে তাঁর। বললেন, ‘‘বিশ্বের সব চেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকার সঙ্গে আমরা লড়াই করে চলেছি। ওরা আমাদের মাথা ঝোঁকাতে পারেনি। আর পারবেও না। কারণ আমরা একজোট। আর আমরা ভালবাসতেও জানি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।