অজিত পওয়ার। —ফাইল ছবি।
আসন্ন মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ শিবির জিতলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলছেন এনসিপি নেতা তথা উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। বিজেপি শিবিরের মতে, গত কাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বিহারের মডেলে শরিক দলের নেতা হিসেবে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তোলেন অজিত। যদিও আজ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। অজিতের দাবি, শাহের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন বা মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কথা হয়নি।
সব ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে সেখানে গিয়েছিলেন শাহ। দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি, দুই শরিক দল শিবসেনা এবং এনসিপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজেপি সূত্রের খবর, শরিক দলগুলির সঙ্গে ভোট নিয়ে প্রাথমিক পর্বের আলোচনা সেরেছেন শাহ। সেই বৈঠকেই বেসুরে বেজে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলেছেন অজিত। বিহারে যে ভাবে ছোট শরিক হয়েও নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপি, ঠিক সে ভাবেই মহারাষ্ট্রে যদি এনডিএ ফের ক্ষমতায় আসে, তা হলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক বলে দাবি করেন এনসিপি প্রধান। পাশাপাশি, বিজেপির দাবি, রাজ্যের ২৫টি আসনে বিজেপির সঙ্গে এনসিপি-র বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন অজিত। বিষয়টি আজ প্রকাশ্যে এলে, তা খণ্ডন করেছেন তিনি। অজিত বলেন, ‘‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের কোনও প্রশ্ন নেই। মুখ্যমন্ত্রী পদও দাবি করিনি।’’ তাঁর দাবি, রফতানি বন্ধ থাকায় রাজ্যের পেঁয়াজ, সয়াবিন ও তুলো চাষিরা যে সমস্যার মধ্যে পড়েছেন, তা নিয়ে শাহের সঙ্গে গত কাল আলোচনা হয়েছে।
বিজেপি নেতৃত্বের মতে, লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের পরেই অজিতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে। দল ভাঙায় কাকা শরদ পওয়ারের সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা মিটিয়ে নিতে চান তিনি। এমনকি, শরদ-কন্যা তথা খুড়তুতো বোন সুপ্রিয়া সুলের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী সুনেত্রাকে দাঁড় করানো যে উচিত হয়নি, তা নিয়েও গত শুক্রবার ফের নিজের ভুল মেনে নেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য বিজেপির একাংশের মত, অজিতের দৌড় কতটা, তা লোকসভার খারাপ ফল স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে অজিতের ফের শরদ পওয়ার শিবিরে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তাই তাঁকে নিয়ে মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী পদ্মশিবির।
মহারাষ্ট্রের ২৮৮ আসনের বিধানসভায় বিজেপি একা অন্তত ১৬০টি আসনে লড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাতেও বাদ সেধেছে শিবসেনা। সূত্রের মতে, একনাথ শিন্দেরা ১০৮টি আসনে প্রার্থী দিতে চান। সেই দাবি মেনে নিলে পড়ে থাকে কুড়িটি আসন। যা বণ্টন হবে অজিতের এনসিপি ও রাজ ঠাকরের এমএনএসের মধ্যে। কিন্তু অজিত ও রাজ যে অত কম আসনে লড়তে রাজি হবেন না, তা বলাই বাহুল্য। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘গত কাল প্রথম বৈঠক হয়েছে। এখনও অনেক আলোচনা বাকি। দল আশা করছে আসন সমঝোতা নিয়ে এনডিএ শরিকদের মধ্যে রফা সূত্র ঠিক বেরিয়ে আসবে।’’