সুভাষ চান্দের
পদোন্নতি হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু সততার জন্য সুভাষ চান্দেরকে স্বাধীনতা দিবসের দিন অফিসার পদে উন্নীত করল এয়ার ইন্ডিয়া।
দিল্লির বাসিন্দা সুভাষ ২৯ বছর ধরে এয়ার ইন্ডিয়ার নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে কয়েকটি ঘটনায় তাঁর সততায় মুগ্ধ সংস্থার কর্তারা। সেই সততা ও সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবেই তাঁর এই পদোন্নতি। সংস্থা জানিয়েছে, সুভাষের ঘটনা প্রথম। এর পরে সংস্থার অন্য কর্মীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদেরও পুরস্কৃত করা হবে।
আর্থিক ভাবে লোকসানে চলা এয়ার ইন্ডিয়া খরচ কমিয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর (সিএমডি) হিসেবে অশ্বিনী লোহানি দায়িত্ব নেওয়ার পরে কর্মীদের উৎসাহিত করার দিকে জোর দেন। এয়ার ইন্ডিয়ার মুখপাত্র জি পি রাও এ দিন বলেন, ‘‘সিএমডি মনে করেন সংস্থার প্রতিটি অফিসার ও কর্মী সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে তবেই উন্নতি হবে।’’ সিএম়ডি অশ্বিনী লোহানির কথায়, ‘‘সেখানে সংস্থার সামগ্রিক কাজের মান আরও ভাল করার দরকার। কর্মীদের উৎসাহিত করলে সেই মান বাড়বে বলেই আমরা মনে করি।’’
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কর্মী খুব ভাল কাজ করেন তাঁকে সংস্থার পক্ষ থেকে ‘স্টার পারফরমার’ পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু, সততার পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করার ঘটনা এই প্রথম।
১৩ বছর আগে সৌদি আরব থেকে দিল্লি আসার পরে ভোপালের বাসিন্দা এক যাত্রী বিমানের আসনে সোনার গয়না ভর্তি ব্যাগ ফেলে যান। বিমানের ভিতরে সেই ব্যাগ পেয়েছিলেন সুভাষ। খুঁজে পেতে যাত্রীকে ফেরত দিয়েছিলেন ব্যাগটি। চলতি বছরের জুনে হংকং থেকে ফেরার সময়ে এক যাত্রী প্রচুর বিদেশি মুদ্রা একই ভাবে বিমানের আসনে ফেলে চলে যান। এ বারেও বিমানের ভিতরে নজরদারি চালানোর সময়ে সেই ব্যাগ সুভাষের চোখে পড়ে যায়। সেই টাকা ফেরত পান যাত্রী।
আর্থিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় মতো বিমান ছাড়ার উপরে জোর দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। সরকারি এই বিমানসংস্থার উড়ান ছাড়তে প্রায়ই দেরি করে বলে বহু যাত্রী এখন বেসরকারি সংস্থার উড়ানে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন। অশ্বিনী দায়িত্ব নেওয়ার পরে জানিয়েছেন, সময় মেনে বিমান ছাড়ার বিষয়ে বিমান সংস্থা কোনওভাবে আপস করবে না। যদি কোনও কর্মীর জন্য বিমান ছাড়তে দেরি হয়ে যায়, তা হলে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে বলেও লোহানি জানিয়েছিলেন। এ বার শাস্তির সঙ্গে যোগ হল পুরস্কারের কথাও।