অরবিন্দ সিংহ লভলি (বাঁ দিকে) এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বদল করলেন মল্লিকার্জুন খড়্গে। অনিল চৌধুরিকে সরিয়ে ওই পদে আনা হল প্রাক্তন মন্ত্রী তথা একদা বিজেপি নেতা অরবিন্দ সিংহ লভলিকে। এই পদক্ষেপের ফলে লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-র সঙ্গে কংগ্রেস আসন সমঝোতা সম্ভাবনা নতুন মাত্রা পেল বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।
২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত দিল্লিতে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী ছিলেন লভলি। ২০১৩-১৫ দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদেও ছিলেন। ২০১৭-য় কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পাঁচ বারের এই বিধায়ক। কিন্তু বছর দেড়েকের মাথাতেই আবার রাহুলের উপস্থিতিতে ‘হাত’ শিবিরে ফিরে আসেন। সম্প্রতি দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস কর্মসমিতির বৈঠকে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে আপের সঙ্গে সমঝোতা না-করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হয়। সেই উদ্যোগে ‘ভূমিকা’ ছিল দলিত নেতা লভলিরও। তবে তুলনায় বেজেপি বিরোধিতাকে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
এআইসিসির একটি সূত্রের দাবি, আপের সঙ্গে সমঝোতা করার বিষয়ে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আপত্তি তো আছেই, গুজরাত কিংবা পঞ্জাবের মতো রাজ্যেও কংগ্রেস নেতারা চাইছেন না আপের সঙ্গে হাত মেলাতে। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি কংগ্রেসকে দুর্বল করে এবং ভোটে দলের ভোট কেটে প্রকারান্তরে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে কেজরীওয়ালের দল। এই পরিস্থিতিতে মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের আগে আপের উপর চাপ বৃদ্ধি করতেই রাহুল-খড়্গের এই কৌশল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনাচক্রে, বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী প্রসঙ্গে বুধবার দুপুরে আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা কক্কর জানিয়েছিলেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে ‘প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার’ হিসাবে তুলে ধরে তাঁরা লোকসভা ভোটে লড়তে চান। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই কেজরী-ঘনিষ্ঠ আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী আতিশী বলেন, ‘‘কেজরীওয়াল প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই।’’ তার পরেই দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি-বদল পদক্ষেপ ঘিরে তৈরি হল জল্পনা।