গ্রেফতার: বাচ্চু কল। নিজস্ব চিত্র
৪২ বছর আগে ৪৫ টাকা দামের পাঁঠা চুরি করেছিল বাবা-ছেলে। ধরাও পড়ে যায়। পুলিশ গ্রেফতার করে। মেলে জামিনও। যাঁর পাঁঠা, ফেরত যায় তাঁর কাছেই। সাড়ে তিন যুগ পরে সেই মামলায় ধরা হল সে দিনের ‘১৬ বছরের ছেলে’কে। তাঁর এখন ৫৮। বাবা প্রয়াত। আর পাঁঠার মালিকের বয়স ৮৬। কানে শোনেন না। আর সে পাঁঠাও আজ নেই।
ত্রিপুরার বোধজং থানার ওসি সুকান্ত সেনচৌধুরী ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানান, ১৯৭৮ সালে আগরতলার নন্দননগর এলাকার কুমুদ ভৌমিকের একটি পাঁঠা চুরি হয়। তিনি থানায় অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত মোহন কল ও তাঁর ছেলে বাচ্চু কল। সে সময় কি হয়েছিল সুকান্তবাবু জানেন না। তবে গত ১২ অগস্ট ত্রিপুরা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়, ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। আসামিদের গ্রেফতার করতে হবে। এর পরেই বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে থানায়। পরোয়ানা পেয়ে সুকান্তবাবু মামলাকারীর ঠিকানা জোগাড় করে তাঁর সঙ্গে কথা বলে জিরানিয়া মহকুমার রানিরবাজারের মেখলিপাড়া চা বাগান থেকে গতকাল বাচ্চু কলকে গ্রেফতার করেন। খবর পান মোহন কলের মৃত্যু হয়েছে। আজ বাচ্চুকে কোর্টে পাঠানো হয়।
আজ অভিযোগকারী কুমুদবাবুকে ফোন করা হলে তাঁর স্ত্রী বিজয়প্রভা ভৌমিক জানান, ৮৬ বছরের কুমুদবাবু কানে কম শোনেন। ৪২ বছর আগের পাঁঠা চুরির গল্প বলেন বিজয়প্রভা। তখন তাঁর দুধের ব্যবসা ছিল। স্বামীর চা ও ফলের দোকান। এক দিন সন্ধ্যায় বাড়ি বাড়ি দুধ দিতে বেরিয়েছিলেন বিজয়প্রভা। ফিরে দেখেন তাঁর পাঁঠাটি নেই। গরু-ছাগল যে ছেলেটি দেখত সেই বাচ্চুর বাড়িতে তিনি যান। তারা বাপ-ছেলে কেউই বাড়িতে ছিল না।
পরের দিন সকালে স্বামীর কাছে কেঁদে পড়েন মহিলা। বিজয়প্রভার কথায়, ‘‘সে দিন ছিল রানির বাজারের হাট বার। সেখানে গিয়ে পাঁঠা-সহ বাপ-ছেলেকে হাতেনাতে ধরেন আমার স্বামী। পাঁঠা পেয়ে তাদের আমিই স্থানীয় মানুষদের হাত থেকে রক্ষা করি। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’ ক’দিন পর তারা ছাড়া পায়।
এখন ৪২ বছর পর কেন আবার তা নিয়ে নাড়াচাড়া, বোধগম্য হচ্ছে না বিজয়প্রভারও।