প্রতীকী ছবি।
প্রথমে সারা বিশ্বকে ভারত খাদ্য জোগাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাক পেটানোর পরে তাঁর সরকার গম রফতানি বন্ধ করে দিল। এ বার ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে চিনি রফতানি হচ্ছে বলে প্রচারের ক’দিন পরে কেন্দ্র চিনির রফতানিতেও লাগাম টানল।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের পরে মোদী সরকারের খাদ্যপণ্য রফতানি নীতি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রথমে রফতানিতে ছাড় দিয়ে তার পরে লাগাম টানার ফলে চাষি থেকে রফতানিকারী— সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কি না?
গম রফতানি বন্ধের পিছনে সরকারের মূল আশঙ্কা ছিল, দেশের বাজারে গমের দাম বেড়ে যাবে। চিনির রফতানিতে লাগাম টানার পিছনেও একই আশঙ্কা কাজ করেছে বলে সরকার মেনে নিয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের বাজারে চিনির যথেষ্ট জোগান ও দাম থিতু রাখাই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। অক্টোবর-নভেম্বরে উৎসবের মরসুমে বাজারে যাতে চিনির জোগান অব্যহত থাকে, তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। গত এক বছর চিনির দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। চিনির দাম ৩৬ থেকে ৪৪ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। কিন্তু ব্রাজিলে কম উৎপাদনের ফলে বিশ্ব বাজারে চিনির জোগান কমতে পারে। বাড়তে পারে দাম। তার ধাক্কা যাতে দেশের বাজারে না পড়ে, তার জন্য ১ জুন থেকে ১০০ লক্ষ টন চিনি রফতানির ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে বিশ্ব বাজারে গমের অভাব সত্ত্বেও ভারত আচমকা গম রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল ভারতের উপরে ক্ষুব্ধ। ভারতের উপরে গম রফতানি শুরু করার জন্য চাপ আসছে। কিন্তু রেশনে গমের বদলে চাল দেওয়া হচ্ছে বলে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আজ বাণিজ্য ও খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, যে সব দেশে খাদ্যের আকাল, সেইসব মিত্র-রাষ্ট্র এবং যেখানে ভারত ঋণ দিচ্ছে, সেখানে ভারত গম রফতানি করবে। কিন্তু এ বছর গমের উৎপাদন ৭-৮ শতাংশ বেশি হলেও তাপপ্রবাহের ফলে মরসুমের শুরুতে গম নষ্ট হয়েছে। ফলে উৎপাদিত গম দিয়ে দেশের চাহিদাই মেটানো যাবে।