বিএসএফ জওয়ান তেজবাহাদুর যাদবের তোলা অভিযোগে কিছুটা সারবত্তা রয়েছে বলে কার্যত মেনে নিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আজ তেজবাহাদুরের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, আসল বিষয়টি চাপা দিতে তেজবাহাদুরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনছে বিএসএফ। আরও এক ধাপ এগিয়ে ওই জওয়ানের স্ত্রী শর্মিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্বামী নিখোঁজ।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন বিএসএফ জওয়ান তেজবাহাদুর সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, সীমান্তে জওয়ানদের খারাপ খাবার দেওয়া হয়। তেজবাহাদুরের দাবি, জওয়ানদের জন্য পাঠানো সরকারের রেশন বাহিনীর কর্তারা বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চান তেজবাহাদুর।
এর পরেই বিএসএফের তরফে জানানো হয়, তেজবাহাদুর আগে অনেক বার নিয়ম ভেঙেছেন। এক বার কোর্ট মার্শালের রায়ে জেলও খেটেছেন। সীমান্তে জওয়ানদের খারাপ খাবার দেওয়া হয় না বলেও বিএসএফের নানা স্তর থেকে দাবি করা হয়।
কিন্তু তেজবাহাদুরের ভিডিওটি দেখে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন রাজনাথ। গত কালই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, ওই জওয়ানের অভিযোগের পাশাপাশি খাবারের মান নিয়েও উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান হচ্ছে। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে আসেন বিএসএফের ডিজি কে কে শর্মা। সাংবাদিকদের এড়িয়ে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে (জওয়ানদের খাবার) কিছু সমস্যা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমার অনুরোধ, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে যেন কেউ হইচই না করেন। ’’
কিন্তু তেজবাহাদুরের পরিবার আজ সরাসরি বিএসএফের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে। হরিয়ানার মহেন্দ্রগড় জেলায় বাড়ি ওই জওয়ানের। তাঁর স্ত্রী শর্মিলা, দাদা হনুমান, বাবা শের সিংহদের দাবি, তেজবাহাদুর সত্য প্রকাশ করেছেন। সে জন্যই নানা অভিযোগ এনে তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করছে বিএসএফ। শর্মিলার কথায়, ‘‘আমার স্বামী কী অন্যায় করেছেন? এ ভাবে ভিডিও পোস্ট না করলে জওয়ানদের খাবারের মানের কথা জানা যেত কি?’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্বামী নিখোঁজ।’’ শর্মিলার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে বিএসএফ।
আজ বিষয়টি নিয়ে আসরে নামেন যোগগুরু রামদেব। এক অনুষ্ঠানে বিএসএফ জওয়ানদের সঙ্গে তোলা ছবি টুইট করে তিনি লেখেন, ‘‘বিএসএফ জওয়ানদের যথেষ্ট যত্ন করা হয়। যে কেউ যা-তা বললে তা নিয়ে হইচই করবেন না।’’ রামদেবের এই বক্তব্য রি-টুইট করেছে বিএসএফ। যা দেখে সরকারেরই এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘চাপে পড়ে ওঁরা এখন রামদেবের শরণ নিচ্ছেন। অবস্থাটা কী, এক বার ভেবে দেখুন।’’