ফারুক আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লা (বাঁ দিক থেকে)। —ফাইল চিত্র
জম্মুর পর এ বার কাশ্মীরের গৃহবন্দি ও আটক নেতাদেরও মুক্তি দেওয়া হবে। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের উপদেষ্টা ফারুক খান এ খবর জানিয়েছেন। তবে এক সঙ্গে নয়, ধাপে ধাপে এই নেতাদের মুক্তি দেওয়া হবে। ফলে ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা এ বার মুক্তি পাচ্ছেন। সূত্রের খবর, আগামী ২৪ অক্টোবর উপত্যকায় ব্লক স্তরের নির্বাচনের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থেকেই জম্মু এবং কাশ্মীরের প্রায় ৪০০ নেতা-নেত্রীকে আটক বা গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিকে আটক করা হয়েছিল। আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ ৮৩ বছর বয়সি ফারুক আবদুল্লাকেও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। এর পাশাপাশি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল-সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের হয় গৃহবন্দি, নয়তো আটক করে রাখা হয়েছিল। তবে বুধবারই জম্মুর নেতা-নেত্রীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ বার কাশ্মীরের পালা।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফারুক খান জানিয়েছেন, ‘‘হ্যাঁ, প্রত্যেকের কার্যক্রম আলাদা আলাদা করে পর্যালোচনা করে ধাপে ধাপে কাশ্মীরের নেতা-নেত্রীদের মুক্তি দেওয়া হবে।’’
৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়া এবং কাশ্মীর ও লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার আগে থেকেই কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল জম্মু কাশ্মীরকে। ল্যান্ড ফোন, মোবাইল, কেবল পরিষেবা বন্ধ করে গোটা উপত্যকায় জারি হয় কড়া নিয়ন্ত্রণ। ফলে গোটা উপত্যকাই ছিল দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন। তবে গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে উপত্যকা। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে ঘোষণা হয়েছে নির্বাচন।
আগামী ২৪ অক্টোবর ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ ব্লক পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে গোটা জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পরে এই প্রথম উপত্যকায় ভোট হচ্ছে। ৩০০ ব্লকের ভোটগ্রহণ ঘিরে উপত্যকায় রাজনৈতিক তৎপরতাও শুরু হয়েছে। ভোটগণনাও হবে ওই দিনই। সেই ভোটগ্রহণকে সামনে রেখেই এই নেতাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।
উপত্যকা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করলেও এখনও অনেক জায়গায় নিয়ন্ত্রণ জারি রয়েছে। বিভিন্ন পকেটে এখনও ইন্টারনেট, মোবাইল, ল্যান্ডলাইন, কেবল পরিষেবা বন্ধ এবং যাতায়াতের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কবে সেই নিয়ন্ত্রণ কবে উঠবে, সে প্রশ্নে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি রাজ্যপালের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিয়ন্ত্রণ তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।