ISC

দু’টি বড় পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরে কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির দাবি

বহু পড়ুয়া এর মধ্যেই বিভিন্ন কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৩:২১
Share:

মিষ্টিমুখ: সিবিএসই দ্বাদশে ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়া দিব্যাংশী জৈন। পরিবারের সঙ্গে সোমবার। পিটিআই

আইএসসি পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে কয়েক দিন আগেই। সোমবার প্রকাশিত হল সিবিএসই দ্বাদশের ফল। প্রতি বছর এই সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে পঠনপাঠনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রকাশ করে নিজেদের কলেজগুলিকে তা জানিয়ে দেয়। কিন্তু এ বছর ভর্তি-প্রক্রিয়া কী হবে, দু’টি বড় পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরেও সেই বিষয়ে পড়ুয়ারা নিশ্চিত নন। অনেকেই বিভ্রান্ত। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির কথা উঠছে।

Advertisement

বহু পড়ুয়া এর মধ্যেই বিভিন্ন কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কী ভাবে ভর্তি হবেন তাঁরা? বহু পড়ুয়া কলেজের অধ্যক্ষদের জানাচ্ছেন, করোনা অতিমারির মধ্যে তাঁরা বাইরে পড়তে যেতে বা বাবা-মা সন্তানদের বাইরে পাঠাতে আগ্রহী নন। অনেকে চাইলেও ছেলেমেয়েদের বাইরে পড়তে পাঠাতে পারছেন না। তাই এ বার কলকাতার কলেজগুলিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় চাপ অনেক বেশি থাকবে বলে মনে করছে শিক্ষা শিবির।

অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো ও প্রবণতা বেশি কলকাতা এবং জেলা শহরগুলিতে। গ্রাম ও মফস্‌সলের কলেজে অনলাইন-পাঠ পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। তাই ওই সব কলেজের পড়ুয়া পেতে অসুবিধা হতে পারে। কারণ, কেউই জানেন না কবে ছেলেমেয়েরা কলেজ ক্যাম্পাসে যেতে পারবেন। হয়তো ভর্তি হয়ে প্রথমে অনলাইনেই ক্লাস করতে হবে। অথচ গ্রামীণ কলেজগুলির অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পরিকাঠামো নেই। তাই ওই কলেজগুলি পড়ুয়া কম পেতে পারে।

Advertisement

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এখনও স্নাতকে ভর্তির নোটিস দেয়নি। যাদবপুরের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, ভর্তির বিষয়ে এখনও বৈঠক হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক ফল প্রকাশের সময়ে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা এখন নেয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। সেই পরীক্ষা স্থগিত আছে। প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রী মিমোসা ঘড়াই সোমবার জানান, ভর্তির প্রক্রিয়া কী হবে, স্থগিত প্রবেশিকা কবে নেওয়া হবে—কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাননি। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ‘‘রাজ্যে যে-ভাবে ভর্তির সিদ্ধান্ত হবে, সেই ভাবেই প্রেসিডেন্সির ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড।’’ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ অবশ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আজ, মঙ্গলবারেই অনলাইনে ভর্তি-প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানান, বিভিন্ন বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল বেরিয়ে যাওয়ার পরেও কলেজে ভর্তির সুরাহা না-হওয়ায় তিনি অনেক উদ্বিগ্ন অভিভাবকের ফোন পাচ্ছেন। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানান, তাঁর কাছেও উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা খোঁজ নিচ্ছেন। ভর্তি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও নির্দেশ তো আসেইনি। এমনকি অনলাইনে ভর্তির জন্য যে-সংস্থা তাঁদের ওয়েবসাইট দেখভাল করে, তাদের সঙ্গেও আলোচনা করা যাচ্ছে না।

এই পরিস্থিতিতেই দাবি উঠছে, ভর্তি হোক কেন্দ্রীয় ভাবে। যে-সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ রয়েছে, এই অতিমারির প্রেক্ষিতে তারা যদি কেন্দ্রীয় ভাবে বিএ, বিএসসি, বি-কমে ভর্তি চালু করে, তা হলে বিভিন্ন কলেজে একই পড়ুয়ার তরফে আসন ‘ব্লক’ করা বা আটকে রাখার জটিলতা থাকে না। এক পড়ুয়ার একটি কলেজে একটি বিষয়ে ভর্তির ব্যবস্থা হলে অনেক ছাত্রছাত্রীর উচ্চশিক্ষার দরজা খুলে যেতে পারে বলেই মনে করছেন জয়দীপবাবু।

ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতি আটকাতে ওয়েবকুটা বার বার কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির দাবি জানিয়েছে। এ দিন ওয়েবকুটার সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত জানান, বর্তমানে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের কেন্দ্রীয় ভাবেই ভর্তি নেওয়া উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement