গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযুক্ত ইডি আধিকারিক অঙ্কিত তিওয়ারিকে। ছবি: পিটিআই।
ঘুষ নিতে গিয়ে ইডি আধিকারিক গ্রেফতার হওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির বিরুদ্ধে সুর চড়াল তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে। ইডির আদ্যক্ষরের সঙ্গে মিলিয়ে ডিএমকের তরফে বলা হচ্ছে ইডি মানে হল ‘এক্সটরশন ডিপার্টমেন্ট’। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘তোলাবাজির দফতর’। বিজেপি অবশ্য ইডির পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছে যে, এক জনের জন্য গোটা সংস্থাকে দোষী ঠাওরানো ঠিক নয়।
সম্প্রতি ২০ লক্ষ টাকা ঘুষের দাবি এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এক ইডি কর্তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। ধৃত ইডি আধিকারিকের নাম অঙ্কিত তিওয়ারি।
একাধিক প্রতিবেদনে প্রকাশ যে, শুক্রবার মাদুরাইয়ে গ্রেফতার করা হয় ওই ইডি আধিকারিককে। এর আগে ওই আধিকারিক গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক ব্যক্তির কাছে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। সেই টাকা নিয়েওছিলেন তিনি। তামিলনাড়ু পুলিশের হাতে ইডি আধিকারিকের এই গ্রেফতারি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। কারণ, সম্প্রতি ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা বিভিন্ন ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে তামিলনাড়ুর একাধিক মন্ত্রী এবং আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।
একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ, পুলিশকে আগে থেকেই খবর দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সূত্র মাফিক সেই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। এর পর নগদ ২০ লক্ষ টাকা নেওয়ার সময় ওই ইডি আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তামিলনাড়ু পুলিশ দাবি করে। পুলিশের একটি সূত্র দাবি করে, অঙ্কিত তিওয়ারি নামে ওই প্রবীণ ইডি আধিকারিক যাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে একটি অর্থ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। সেই মামলা থেকে তাঁকে নিষ্কৃতি দেওয়া হবে, পরে কোনও পদক্ষেপই করা হবে না, এমনই আশ্বাস দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয় ওই ব্যক্তির কাছে। ওই ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ জানান। বস্তুত, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি দিল্লি এবং রাজস্থান থেকেও ইডি আধিকারিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে দক্ষিণ ভারতের কোনও রাজ্যে ইডি আধিকারিকের গ্রেফতারি সাম্প্রতিক অতীতে কেউ মনে করতে পারছেন না। গোটা ঘটনায় দক্ষিণের ওই রাজ্যে রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ডিএমকে সাংসদ দয়ানিধি মারান নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “ইডি এখন ‘এক্সটরশন ডিপার্টমেন্ট’। বিজেপির শাসনাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী এবং সমালোচকদের শায়েস্তা করতে ইডিকে ব্যবহার করছে।” ইডির ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সভাপতি কেএস আলাগিরি ইডি আধিকারিকের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বলেন, “পুলিশ অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইডির দফতরে গিয়েছিল। যদি তিনি নিরপরাধই হবেন, তা হলে পুলিশের প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়ালেন না কেন? কেন পালিয়ে গেলেন?”