চণ্ডীগড়ের সদ্য প্রাক্তন মেয়র মনোজ সোনকর। —ফাইল চিত্র।
চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সোমবার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তার আগে রবিবার রাত থেকেই চণ্ডীগড়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সূত্রপাত হল। রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎই পদত্যাগ করেন চণ্ডীগড় পুরনিগমের মেয়র তথা বিজেপি নেতা মনোজ সোনকর। অন্য দিকে, ওই দিনই আপ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিন কাউন্সিলর— পুনম দেবী, নেহা এবং গুরুচরণ কালা।
৩৫ সদস্যের চণ্ডীগড় পুরনিগমে বিজেপির ১৪ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তবে আপের তিন সদস্য যোগ দেওয়ার পর সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে ১৭। শিরোমণি অকালি দলের এক মাত্র কাউন্সিলর বিজেপিকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি, পুরনিগমের প্রাক্তন সদস্য হিসাবে ভোটাধিকার রয়েছে চণ্ডীগড়ের বিজেপি সাংসদ কিরণ খেরের। সব মিলিয়ে বিজেপির পক্ষে রয়েছে ১৯টি ভোট, যা চণ্ডীগড় পুরনিগমে ‘জাদুসংখ্যা’ ছোঁয়ার জন্য পর্যাপ্ত।
তিন জন দল ছাড়ার পরে আপের কাউন্সিলর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। পুরনিগমে কংগ্রেসের সাত কাউন্সিলর রয়েছেন। গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে ওই নির্বাচনে যৌথ ভাবে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। পুরপ্রতিনিধিদের ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিংহ। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহের পাওয়া ৮টি ভোট বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা। আপ-কংগ্রেস জোটের অভিযোগ, গণনার ঠিক আগে অনিল নিজেই কলম দিয়ে কয়েকটি ব্যালটে ‘দাগ’ দিয়েছিলেন। পরে সেগুলিই বাতিল করেন তিনি। ব্যালট পেপারের উপরে কাটাকুটি করার একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে নিয়ে আসে আপ। প্রসঙ্গত, নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়। কিন্তু চণ্ডীগড়ে সেই অফিসারের বিরুদ্ধেই পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠে।
এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, মেয়র নির্বাচনের সময় প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা ব্যালট পেপার বিকৃত করেছিলেন। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’’ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পুরপ্রতিনিধিদের নির্ধারিত বৈঠকের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালত। প্রিসাইডিং অফিসার অনিলকে সোমবার শীর্ষ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।