নরেন্দ্র মোদীর আমলে দেশের উচ্চশিক্ষার হাল ঘটা করে প্রকাশ করতে গিয়ে উল্টে অস্বস্তিতে পড়ে গেল কেন্দ্র। আজ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যে সমীক্ষা (২০১৬-১৭) রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গত তিন বছরে অর্থাৎ মোদীর শাসনকালে উচ্চশিক্ষায় পড়ুয়াদের ভর্তির হার আগের সরকারের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। দেশের ৮৬৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৪০,০২৬টি কলেজের তথ্যের ভিত্তিতে ওই রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্র।
দেশের ১৮-২৩ বছরের পড়ুয়াদের অন্তত ত্রিশ শতাংশকে ২০২০ সালের মধ্যে উচ্চ শিক্ষার বৃত্তে তুলে আনতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল মনমোহন সিংহের আমলে। আজ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত গোটা দেশের ২৫.২ শতাংশ ছাত্র উচ্চশিক্ষায় পাঠরত। আশা করছি, ২০২০ সালের মধ্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারব।’’ রাজ্যগুলির মধ্যে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে তামিলনাড়ু। জাতীয় গড় যেখানে ২৫.২ শতাংশ, সেখানে ওই রাজ্যের ৪৫ শতাংশের বেশি পড়ুয়া উচ্চশিক্ষায় নাম লিখিয়েছেন। তার পরেই অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র। জাতীয় গড়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশও। ২০ শতাংশের নীচের তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের (১৮.৫ শতাংশ) এবং বিহারের (১৫ শতাংশ)।
এ দিকে সমীক্ষা রিপোর্টে পরিসংখ্যান দেখে রীতিমতো অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় কর্তারা। পুরনো রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০১৪— এই তিন বছরে যেখানে ছাত্র ভর্তি ৪ শতাংশ হারে বেড়েছে, সেখানে গত তিন বছরে সেই বৃদ্ধির পরিমাণ মাত্র ২.২ শতাংশ। যা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয় বলে ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করছেন মন্ত্রক কর্তারা। তবে পাল্টা যুক্তিতে বলা হচ্ছে, ২০০৭-১০ এই সময়ে দেশে কমবেশি ৪০টির (আইআইটি, আইআইএম, এনআইটি, কেন্দ্রীয় ও ডিমড বিশ্ববিদ্যালয়) কাছাকাছি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। সেই কারণে উচ্চশিক্ষায় ছাত্র-ভর্তির হারও উল্লেখজনক হারে বাড়ে। সেই তুলনায় গত তিন বছরে আইআইটি ও আইআইএম মিলিয়ে ডজন খানেক নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। পরিকাঠামোগত এই পার্থক্যের ফলেই ছাত্র ভর্তির সংখ্যা কমেছে বলে দাবি মন্ত্রকের।
সেই দাবি উড়িয়ে মন্ত্রক কর্তা এবং শিক্ষাবিদদের একাংশের দাবি, সে ক্ষেত্রে তো আরও বেশি সংখ্যক নতুন পড়ুয়ার ভর্তির সুযোগ ছিল। কিন্তু তা হাতছাড়া হয়েছে সরকারের নীতির ফলে।