হেঁটে সংসদের পথে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগে হামলা হয়েছিল অধীর চৌধুরীর নয়াদিল্লির সি-১/৪ হুমায়ুন রোডের বাংলোয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার নতুন অভিজ্ঞতার মুখে পড়লেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা।বৃহস্পতিবার দুপুরে দিল্লির বাড়ি থেকে সংসদ যাওয়ার পথে, বিজয় চকে তাঁর গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। বাধ্য হয়ে গাড়ি ছেড়ে হেঁটেই সংসদে পৌঁছন তিনি। এ ঘটনায় দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন অধীর। তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও।
বাড়ি থেকে গাড়িতে সংসদ— এত দিন এটাই ছিল অভ্যাস। কিন্তু তাতে ছেদ পড়ল এ দিন। দুপুরে সংসদের বিরতির সময় বাড়ি গিয়েছিলেন অধীর। দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ ফের সংসদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় বিজয় চকে পুলিশ তাঁর গাড়ি আটকে দেয়। কেন গাড়ি আটকানো হল? পুলিশের কাছে তার কারণ জানতে চান অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ বলে আমার গাড়ির স্টিকারের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে।’’
অধীরের দাবি, ‘‘গাড়িতে যে স্টিকার লাগানো ছিল তা ২০১৯-এর। লোকসভার বিজ্ঞপ্তিতেও আছে, ২০১৯-এর স্টিকার ২০২০-র ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৈধ থাকবে।’’পুলিশকে বার বার তিনি বিষয়টি বলার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ তা মানতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত বিজয় চক থেকে হেঁটেই সংসদে পৌঁছন তিনি। একই পরিস্থিতির মুখে পড়েন আর এক কংগ্রেস সাংসদ গুরজিৎ সিংহ অজলাও। গাড়ি ছেড়ে তিনিও হেঁটে সংসদে পৌঁছন।
আরও পড়ুন: বাজেট অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড ৭ কংগ্রেস সাংসদ, ক্ষোভ অধীরের
সংসদে ঢোকার মুখে এমন নজিরবিহীন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে ক্ষুব্ধ অধীর। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কী চলছে দিল্লিতে? দেখে তাজ্জব হয়ে যাচ্ছি। সংসদের স্পিকারের নির্দেশে আমরা চলি। তাঁর সে অধিকার আছে। কিন্তু, যদি ভিন্ন ভিন্ন লোক নানা ধরনের নির্দেশ দেন তা হলে কোথায় যাব?’’ এই ঘটনাকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিঁধেছেন তিনি। বলছেন,‘‘প্রযোজনে সংসদে আমরা ১০ বার যাব। দিল্লিতে স্বৈরতন্ত্র চলছে। বেআইনি কার্যকলাপ চলছে। এক জন সাংসদকেই যদি এই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় তা হলে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে কী হবে?’’
গত মঙ্গলবার অধীর চৌধুরীর বাংলো সংলগ্ন অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিন থেকে চার জন দুষ্কৃতী আচমকা হামলা চালায়। বাধা দিলে উপস্থিত কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতিও বাধে বলে দলীয় সূত্রে খবর। দুষ্কৃতীরা তাঁর অফিসের কিছু ফাইল ও নথিপত্র নষ্ট করে দেয় বলে অভিযোগও উঠছে।
আরও পড়ুন: তাপস পালের মৃত্যুর আসল কারণ কী? জবাব চাইছে টলিউড
পর পর দু’টি ঘটনা। অধীরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন এ দিন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পরে রাজ্যপাল টুইট করেন, ‘‘প্রবীণ সাংসদ ও লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তাঁর দিল্লির বাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে তা জেনেছি। জানতে পেরেছি এখন সব ঠিক আছে।’’