স্বপন দাশগুপ্ত, মেরি কম, নরেন্দ্র যাদব, সুব্রক্ষ্মণ্যম স্বামীদের শপথ নেওয়ার দিনেই তৃণমূল সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীর দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে উত্তাল হল রাজ্যসভা।
সারদায় নাম জড়ানোর পর থেকে প্রবল অভিমানে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন মিঠুন। ২০১৪ সালের ১০ জুন তিনি রাজ্যসভায় সাংসদ হিসেবে শপথ নেন। সেই বাদল অধিবেশনেই তিনি বার কয়েক সংসদে এসেছিলেন। সেই শেষ! নভেম্বর মাস থেকে সারদা মামলায় তাঁর নাম জড়িয়ে যায়। গত বছর মে মাসে ইডি তাঁকে ডেকে পাঠানোর পর তারকা সাংসদের অস্বস্তি আরও প্রবল হয়। সংসদে আর তাঁকে দেখা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন উঠেছে সংসদে। আজ রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়ান জানান, মিঠুন তাঁর অসুস্থতার কারণে বর্তমান অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে আর্জি জানিয়েছেন। মিঠুনের চিঠিটি কুরিয়ান সভাকক্ষে পড়ে শোনান। তার পরেই সমাজবাদী পার্টির সদস্য নরেশ অগ্রবাল ক্ষুব্ধ ভঙ্গিতে বলে ওঠেন, এক জন সাংসদ কতগুলি অধিবেশনে চিঠি ধরিয়ে ছুটি পেতে পারেন? এই ছাড়পত্রের একটা সীমা থাকা দরকার। নরেশের দাবি, ‘‘কেউ অসুস্থ থাকতেই পারেন। কিন্তু প্রত্যেকটি অধিবেশনেই তার জন্য ছুটি নিলে সেটা সাংসদের সুবিধার অপব্যবহার করা হয়।’’
রাজ্যসভায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে আজ উপস্থিত একমাত্র সাংসদ ছিলেন সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি তখন উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমাদের দলীয় সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ। তিনি এ ব্যাপারে মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দিয়েছেন। আমি অনুরোধ করছি তাঁর ছুটি মঞ্জুর করা হোক।’’ কিন্তু সুখেন্দুশেখরবাবুর কথা শুনেও সভায় ক্ষোভ কমেনি। জেডি (ইউ) সাংসদ কে সি ত্যাগী বলেন, ‘‘সব দলেই একটা নিয়ম করা উচিত যে তারা যাঁকে পাঠাচ্ছে, তিনি যেন সংসদে আসেন এবং তাঁর দ্বারা সংসদ যেন লাভবান হয়।’’ কেউ বারবার অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করা হোক বলেও দাবি ওঠে।
জবাবে কুরিয়ান বলেন, ‘‘যদি কোনও সদস্য জানান যে তিনি অসুস্থ তা হলে তাঁকে অবিশ্বাস করার কারণ নেই। প্রাথমিক ভাবে তাঁর বক্তব্যকেই মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু যদি অন্য কিছু প্রমাণিত হয় তা হলে আমরা দেখব করণীয় কী রয়েছে।’’
তৃণমূল সূত্রে অবশ্য খবর, শুধুমাত্র চলতি অধিবেশন নয়, তাঁর মেয়াদের বাকিটুকুও সংসদে আসার কোনও পরিকল্পনা নেই মিঠুনের। তিনি সেটা জানিয়েও দিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতৃত্বকে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই অনুযোগ যে তাঁর দলের সাংসদ তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেন না।