গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অসম-মিজোরাম সীমানায় সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশকর্মীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে একযোগে তোপ দাগলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধী। এই ঘটনার জন্য সরাসরি বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছেন তাঁরা। অভিষেক-রাহুলের একই সুরে আক্রমণ নতুন করে কংগ্রেস-তৃণমূলের কাছাকাছি আসার জল্পনায় আরও ইন্ধন দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে অভিষেক টুইট করেন, ‘অসম, মিজোরাম সীমানায় হিংসার ঘটনায় হতবাক ও স্তম্ভিত। মৃতদের পরিবারকে জানাই সমবেদনা। বিজেপি সরকারের অধীনে এই ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটাচ্ছে।’ ভারতবাসী আরও ভাল সরকার পাওয়ার যোগ্য বলেই মনে করেন তিনি। অনেকটা একই সুরে রাহুল টুইট করেন, ‘নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আশা করছি আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। মানুষের জীবনে ঘৃণা ও হিংসার যে বীজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বপন করেছে, তা আরও একবার দেশের নাম খারাপ করল। ভারত এখন তার ভয়ঙ্কর ফল ভোগ করছে।’
অভিষেক ও রাহুল দু’জনেই নিজেদের টুইটে ‘অসমমিজোরামবর্ডার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন। এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে, দু’জনে পরিকল্পিত ভাবে টুইট করেছেন। কিন্তু কাকতালীয় ভাবে হলেও দু’জনেরই আক্রমণের লক্ষ্য মিলে গিয়েছে। যেমন মিলে গিয়েছে আক্রমণের সময়ও।
প্রসঙ্গত, ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় গত রবিবার অভিষেকের ছবি দিয়ে টুইট করে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছিল কংগ্রেস। তার পরেই জল্পনা শুরু হয়, তবে কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সদরের আগেই তৃণমূলকে সখ্যের বার্তা দিল কংগ্রেস। মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেসের তিন বর্ষীয়ান নেতা আনন্দ শর্মা, কমল নাথ ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা মমতার। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও দেখা করতে পারেন তিনি। তবে তা সংসদ ভবনে হবে না অন্য কোথাও, তা এখনও তৃণমূলের তরফে জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও মঙ্গলবার বিকেলেই দেখা করার কথা মমতার।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের একযোগে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। সেই পরিকল্পনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতেই দিল্লি সফরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। এরই মধ্যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিষেক ও রাহুলের একই সুরে টুইট সেই জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিল।
এ দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও অশান্ত হয়ে রয়েছে অসমের পরিস্থিতি। জায়গায় জায়গায় রাস্তায় চলছে বিক্ষোভ। ইতিমধ্যেই অসম সরকার তিন দিনের রাজ্য শোকের ঘোষণা করেছে। অর্ধনমিত থাকবে পতাকা। এই সময় কোনও ধরনের জমায়েত করা যাবে না বলেই জানানো হয়েছে অসম পুলিশের তরফে।