ছবি: পিটিআই।
নাগরিকত্ব আইন খারিজের দাবিতে গুয়াহাটির লতাশিল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আজও চলল আসুর ডাকা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। লতাশিলের সভা শেষে মিছিল বের করার পরে আটক করা হয় আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈ-সহ তিন শতাধিক বিক্ষোভকারীকে। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আগামী কালও আসুর একই কর্মসূচি। আজ বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তিনসুকিয়া, শিবসাগরেও। অবস্থান বিক্ষোভে বসেন শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা। অবরোধ করা হয় ১৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। তবে ট্রেন চলাচল আস্তে আস্তে স্বাভাবাবিক হচ্ছে। অন্য দিকে, অসমে হিংসার ঘটনার সার্বিক তদন্ত এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
এ দিকে, এক জনস্বার্থের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গৌহাটি হাইকোর্ট আজ বিকেল তিনটের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট চালু করতে বললেও রাজ্য সেই নির্দেশ মানেনি। সরকারি মুখপাত্র হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, হাইকোর্টের নির্দেশকে সম্মান জানালেও গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, অসম অশান্ত করার চক্রান্ত চলছে। সে কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হবে বলে আদালতকে জানানো হয়েছে। ১১ ডিসেম্বর থেকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অ্যাপ ক্যাব ও খাদ্য সরবরাহ পরিষেবা বন্ধ। আজ ক্যাব চালকরা অবরোধের হুমকি দেয়।
নয়া আইনের প্রতিবাদে আগামী কাল সরকারি কর্মীদের একটি সংগঠন কর্মবিরতি ডেকেছে। হিমন্ত জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ছুটি কাটা হবে। পুলিশি রিপোর্টের ভিত্তিতে হিমন্ত দাবি করেন, গুয়াহাটিতে ভাঙচুর করা অধিকাংশই নামনি অসমের মানুষ। আসুর আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও রাজ্য সরকারের সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য এক শিক্ষাবিদের নেতৃত্বে কন্ট্রোলরুম গড়ে আন্দোলন পরিচালনা করা হয়েছিল।
ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে তিনি জানান, যুব কংগ্রেস নেতাকে আগুন লাগানোর পরে সঙ্গীদের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে। কলাক্ষেত্রে হামলায় জড়িত ছিল এক এনএসইউআই নেতা। নগাঁওয়ের যুব কংগ্রেসের এক নেত্রীর ফেসবুক পোস্টে দেখা গিয়েছে, তাঁরা লোকজনকে সরাসরি সচিবালয়ের দু’নম্বর গেটে জড়ো হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। হিমন্ত জানান, সিমি নিষিদ্ধ হওয়ার পরে ইসলামিক ছাত্র সংগঠন ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’ গড়া হয়েছিল। সেই পিএফআইয়ের সদস্যরাও হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ফুটেজগুলি থেকে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে।’’
হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগে ধৃত অখিল গগৈকে আজ ১০ দিনের হেফাজতে নেয় এনআইএ। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০বি, ১২৪এ, ১৫৩এ, ১৫৩বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, ‘‘অখিল যদি এত বড় সন্ত্রাসবাদী হয় তা হলে সরকার কেন তাঁর সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে না?’’ বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার দাবি, অখিল জঙ্গি নন। সরকার-বিরোধী আন্দোলনের জন্যই বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির জন্য হিমন্তবিশ্বকেই গ্রেফতার করা উচিত।’’