ছবি: পিটিআই।
কাজে এসেছে নরম হিন্দুত্ব। কাজে এসেছে অরবিন্দ কেজরীবালের হনুমান মন্দিরে যাওয়াও। ভোট প্রাপ্তির হিসেব প্রমাণ করেছে, দিল্লিতে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দুরাও এক জোট হয়ে ভোট দিয়েছেন আম আদমি পার্টিকে। অনেকেই বলছেন, বিজেপির রামকে পিছনে ফেলেছে আপ-এর হনুমান। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক এড়াচ্ছেন আপ নেতারা। বরং দু’বছর পরে দিল্লিতে পুরসভা নির্বাচনের দিকে নজর তাঁদের। বিজেপির হাত থেকে দিল্লির পুরসভাগুলি পুরসভা ছিনিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর আপ। তাই হিন্দু ভোট যাতে পুরসভাতেও দলের সঙ্গে থাকে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতি মাসের প্রথম মঙ্গলবার দিল্লিতে রামায়ণের সুন্দর কাণ্ড পাঠের সিদ্ধান্ত নিল কেজরীবালের দল। যে পাঠ-পর্ব শুরু হল আজ থেকে। যদিও আপের দাবি, হিন্দুত্ব যে বিজেপির একার সম্পত্তি নয়, তা বোঝাতেই ওই পদক্ষেপ। এতে রাজনীতি খোঁজা অর্থহীন।
বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আপ নেতৃত্ব শাহিন বাগের সমর্থনে মুখ খুলতেই অরবিন্দ কেজরীবালদের হিন্দু বিরোধী বলে শেষবেলায় প্রচারে নামে বিজেপি। ফাঁপরে পড়ে আপ ঠিক করে, নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটবে দল। সেই কৌশল মেনে হিন্দু ভোটারদের বার্তা দিতে ঘুরে ঘুরে হনুমান মন্দিরে পুজো দেওয়া শুরু করেন কেজরীবাল। ভোটের ফল বেরোলে দেখা যায়, তাতে কাজ হয়েছে। কৌশল সফল হওয়ায় এ বার সেই নরম হিন্দুত্বের বার্তা আরও ব্যাপক ভাবে গোটা দিল্লিতে ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন আপ নেতৃত্ব।
রামায়ণের সুন্দর কাণ্ড হল মূলত হনুমানের কীর্তিকথা, ভক্তি ও বীরত্বের কাহিনী। উত্তর ভারতে হনুমান ভক্তরা মঙ্গলবারকে হনুমানের দিন হিসেবে মেনে তাঁর পুজো করেন। তাই প্রতি মাসের প্রথম মঙ্গলবার দিল্লির বিভিন্ন স্থানে সুন্দর কাণ্ড পাঠ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ। আজ প্রথম সুন্দর কাণ্ড পাঠ হওয়ার কথা চিরাগ দিল্লির প্রাচীন শিব মন্দির প্রাঙ্গনে। যার উদ্যোক্তা হলেন বাঙালি অধ্যুষিত চিত্তরঞ্জন পার্ক-গ্রেটার কৈলাশের বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি হিন্দুত্বের নামে যে দ্বেষের রাজনীতি করছে, তার জবাবে ওই উদ্যোগ। বিজেপি মনে করে হিন্দুত্বের উপর তাদের একার অধিকার রয়েছে। আর যে হিন্দুরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে, তারা দেশবিরোধী। সেই ছবিটি বদলাতেই ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ সব দেখে এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘আপ ক্রমশ বিজেপির বি-টিম হওয়ার দিকে এগোচ্ছে!’’