—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে ছাড়া হয়েছিল নামিবিয়া থেকে আনা আটটি চিতাকে। স্বপ্নের চিতা প্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদী বলেছিলেন, ‘ঐতিহাসিক দিন’। কিন্তু এক বছর পরে ভারতের সেই চিতা প্রকল্প নিয়েই একরাশ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই আবহে চিতা প্রকল্পের পরিচালন কমিটির প্রধান রাজেশ গোপাল জানালেন, ভারতে যে নতুন চিতাগুলি আসতে পারে, সেগুলিকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে মধ্যপ্রদেশেরই গান্ধীসাগর অভয়ারণ্যে।
ইংরেজি সংবাদপত্র ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজেশ জানান, কেনিয়ার মাসাইমারার মতো পরিবেশ রয়েছে ওই অভয়ারণ্যে। পূর্ব আফ্রিকার মতোই সেখানে পাথুরে জমি, ফাঁপা মাটি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন রাজেশ। তাঁর কথায়, “এটা সম্পূর্ণ করতে সময় লাগবে। কিন্তু এলাকাটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। জায়গাটি দেখতে অনেকটা মাসাইমারার মতো।”
সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে প্রথম দফায় ৮টি চিতাকে আনা হয়েছিল কুনো-য়। দ্বিতীয় দফায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয় আরও ১২টি চিতা। বর্তমানে সেখানে ১৫টি চিতা রয়েছে। এর আগে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ (এনসিটিএ) জানিয়েছিল, এর আগে দুটি নামিবিয়ান স্ত্রী চিতা, তিনটি সাউথ আফ্রিকান পুরুষ চিতার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও গত এক বছরে মৃত্যু হয়েছে পাঁচটি চিতাশাবকেরও। চিতাগুলির উপর নজরদারি চালানোর জন্য রেডিয়ো কলার ব্যবহার করা হচ্ছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই কলার গলায় বসে গিয়েই ঘা এবং সেখান থেকে রোগ সংক্রমণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে চিতাগুলি।
অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের কুনোতেই রাখা হয়েছে, আগে সেই প্রশ্নও তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বন্যপ্রাণ বিজ্ঞানী তথা মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-এর সদ্য অপসারিত প্রধান যাদবেন্দ্রনাথ ঝালা সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের যা পরিসর, সেখানে ৫০টি দূরের কথা, ২০টি চিতারও স্বচ্ছন্দ বসবাসেরও সুযোগ নেই। তা ছাড়া সেখানে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো হরিণ বা বনশুয়োরেরও অভাব রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের লাগোয়া রাজস্থানের মুকুন্দারা অভয়ারণ্যের কিছুটা অংশও চিতা পুনঃস্থাপন কেন্দ্রের অন্তর্গত করা প্রয়োজন।’’ কিন্তু সেখানেও রাজনৈতিক কারণকে প্রধান অন্তরায় বলে চিহ্নিত করে তিনি বলেছিলেন, “আমার মনে হয়, এই অনীহা একেবারেই রাজনৈতিক কারণে।’’ কারণ, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান ‘চিতার ভাগ’ পেয়ে যাবে বলে জানিয়েছিলেন ঝালা।
এ বার বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশেরই অন্য অভয়ারণ্যে নতুন চিতাদের নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন এই প্রকল্পের প্রধান।