প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
খাদ্য বা বাসস্থানের সমস্যা ছিল না। এলাকা দখলের লড়াইয়ে নেমে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হারতে হয়েছিল বলেও ‘খবর’ মেলেনি। তবুও মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ থেকে একটি বাঘ চার রাজ্য ঘুরে, প্রায় দু’হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পেরিয়ে হাজির হল ওড়িশায় দক্ষিণ ওড়িশার পূর্বঘাট পর্বতমালায়!
তাড়োবা ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ব্রহ্মপুরী বনাঞ্চলের বাসিন্দা ওই বাঘটির খোঁজ মিলছিল না বেশ কিছু দিন ধরেই। গলায় ‘রেডিয়ো কলার’ পরানো না থাকায় তার অবস্থানও চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ওড়িশার মহেন্দ্রগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। মুখ এবং গায়ের কালো ডোরার ‘প্যাটার্ন’ দেখে তাকে শনাক্তও করা গিয়েছে।
বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ এবং বন দফতরের আধিকারিকেরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন, মনের মতো সঙ্গিনীর খোঁজেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে সে। পেরিয়ে গিয়েছে একের পর এক জনপথ, চাষের ক্ষেত, নদী, পাহাড়। মহেন্দ্রগিরি এলাকায় সঙ্গিনী না মেলায় বিবাগী বাঘ আবার পরিযান শুরু করতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে বিদর্ভেরই টিপেশ্বর অভয়ারণ্য ছেড়ে সঙ্গিনীর খোঁজে পাড়ি দিয়েছিল একটি বাঘ। প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার হেঁটে রেকর্ড গড়ে ফেলেছিল সে। তবে তেলঙ্গানার জঙ্গল ঘুরে মনের মতো বাঘিনির সন্ধান না পেয়ে ফিরে এসেছিল পুরনো এলাকাতেই। ওড়িশায় পৌঁছে যাওয়া তাড়োবার বাঘটি এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় দীর্ঘতম পথ পরিযানের রেকর্ড গড়ল।
কিন্তু বাঘের মতো বড় প্রাণী কী ভাবে নজর এড়িয়ে জনবহুল এলাকা দিয়ে দিনের পর দিন যাত্রা করতে পারে? বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এ ক্ষেত্রে দিনের বেলায় বিশ্রাম নিয়ে রাতে জঙ্গল, নদী, রাস্তা পেরিয়ে হেঁটেছে পরিযায়ী বাঘ। দীর্ঘ পথে বড় লোকালয় এড়িয়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে গবাদি পশু মারলেও মানুষের উপর হামলা করেনি। তাই অলক্ষ্যেই পেরিয়েছে চার রাজ্যের সীমানা।