Education

‘টাকা, খাবার সব দেব, সন্তানদের স্কুলে পাঠান’! গ্রাম ঘুরে অভিভাবকদের বোঝাচ্ছেন সাব-ইনস্পেক্টর

পুলিশের কাজ সামলে তিনি বেরিয়ে পড়েন তাঁর থানা এলাকায়। ঘুরে ঘুরে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন কোন কোন পরিবারের সন্তানরা স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:১৭
Share:

সাব-ইনস্পেক্টর পরমশিবম গ্রাম ঘুরে অভিভাবকদের বোঝানোর কাজ করে চলেছেন। ছবি: সংগৃহীত।

তিনি একাধারে অপরাধীদের ধরেন। আবার স্কুলবিমুখদের স্কুলেও ফেরাতেও উদ্যোগী হন। এক পুলিশকর্মীর এই ভূমিকায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেননি। বরং তাঁকে আরও উৎসাহ জুগিয়েছেন এই কাজ করার জন্য। ‘টাকা, খাবার যা প্রয়োজন সব দেব। কিন্তু সন্তানদের শ্রমিকের কাজ না করিয়ে স্কুলে পাঠান’— এই মূলমন্ত্র নিয়েই এখন গ্রামে ঘুরে ঘুরে অভিভাবকদের বোঝাচ্ছেন ওই সাব-ইনস্পেক্টর।

Advertisement

পরমশিবম। বছর চল্লিশের এই ব্যক্তি তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের পেন্নালুরপেত্তাই থানার সাব-ইনস্পেক্টর। পরমশিবম খবর পেয়েছিলেন তাঁর থানা এলাকায় বহু শিশু স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুলবিমুখ সেই সব শিশুদের স্কুলে ফেরাতে তিনি নিজেই উদ্যোগী হন। যোগাযোগ করেন জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে। কত জন শিশু স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, কেন যাচ্ছে না, সব খোঁজখবর নেন।

পুলিশের কাজ সামলে তিনি বেরিয়ে পড়েন তাঁর থানা এলাকায়। ঘুরে ঘুরে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন কোন কোন পরিবারের সন্তানরা স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কেন স্কুল যেতে চাইছে না, তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করেন। পরমশিবমের থানা এলাকার বেশির ভাগই উপজাতি সম্প্রদায়ের। দরিদ্র। দিন আনা, দিন খাওয়া এক একটি পরিবার। অর্থ উপার্জনের তাগিদে, সংসার টানতে তাই অধিকাংশই তাঁদের সন্তানদের স্কুল যাওয়া বন্ধ করিয়ে শ্রমিকের কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। গ্রামে ঘুরে এ দৃশ্য দেখে, সব কিছু জানতে পেরে ব্যথিত হয়েছিলেন পরমশিবম। তার পরই স্থির করেন, যে কোনও প্রকারেই হোক না কেন, ছোট ছোট শিশুদের স্কুলমুখো করতে হবে।

Advertisement

তাই কাজ শেষে গ্রাম ঘুরে ঘুরে অভিভাবকদের বোঝানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। শিক্ষার অর্থ বোঝাচ্ছেন তাঁদের। কেন স্কুল পাঠানো উচিত, তা-ও প্রায় পাখি পড়ানোর মতো অভিভাবকদের মগজে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। অভিভাবকদের তিনি বলেন, “টাকা, খাবার, বইখাতা, স্কুলের বেতন— যা-ই দরকার হোক না কেন, নির্দ্বিধায় আমার কাছে চলে আসুন। আমি সব ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু দয়া করে সন্তানদের স্কুলে পাঠান।” পাশাপাশি কড়া বার্তাও দিয়েছেন পরমশিবম। তিনি জানিয়েছেন, যদি এর পরেও স্কুলে না পাঠান, তা হলে তাঁদের অভিযুক্ত হিসাবে ধরা হবে। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হতে পারে। কোনও গুজবে কান না দিয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন এই এসআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement