Coromandel Express accident

বরাতে বাঁচলাম, কাজটা থাকবে তো!

হঠাৎ দেখলাম পাশের লাইন দিয়ে উল্টো দিকে একটা ট্রেন যাচ্ছে। আর তার পরেই আমাদের গোটা ট্রেনটায় প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। সঙ্গে বিকট শব্দ। মুহূর্তে সব অন্ধকার।

Advertisement

জাহিরুদ্দিন মোল্লা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩ ০৮:৫৩
Share:

দুর্ঘটনার পর দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ট্রেনের কামরা। —নিজস্ব চিত্র।

আমি আর আমাদের গ্রামেরই যুবক মুস্তাজুল ঘরামি উঠেছিলাম করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এস-১ কামরায়। শালিমার স্টেশন ছেড়ে নির্ধারিত সময়েই খড়্গপুরে পৌঁছেছিল ট্রেন। বালেশ্বর ছাড়ার পরে ট্রেনের গতি বাড়তে থাকে। তখন সন্ধে। নীচের বার্থে বসে সহযাত্রীদের সঙ্গে গল্প করছি। হঠাৎ দেখলাম পাশের লাইন দিয়ে উল্টো দিকে একটা ট্রেন যাচ্ছে। আর তার পরেই আমাদের গোটা ট্রেনটায় প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। সঙ্গে বিকট শব্দ। মুহূর্তে সব অন্ধকার। কামরার কোনও আলো জ্বলছে না, চলছে না ফ্যানও। কানে এল প্রবল আর্তনাদও। সঙ্গে সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণাও অনুভব করলাম। আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল, তখন আমি হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে। কোন হাসপাতাল? সেটাও পরে জানলাম। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আমাকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সোরো হাসপাতালে (ওড়িশা) ভর্তি করা হয়।

Advertisement

আমার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ শ্রীনগর পঞ্চায়েতের এক গ্রামে। এখানে কাজের বড় আকাল। তাই কেরলে গিয়েছিলাম। সেখানেই নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি। দু’মাস ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরছিলাম। ভেবেছিলাম, সোমবার থেকে কাজে যোগ দেব। তা তো আর হল না। এখন সারা শরীরে ক্ষত। বহু জায়গায় কেটে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য করছেন। একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্সে যাত্রীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। এই দৃশ্য আর সহ্য করতে পারছি না!

মুস্তাজুল কোথায়, সেটাও বুঝতে পারছি না। কেউ ওর খোঁজও দিতে পারছে না। শুনলাম, হাসপাতালের তরফে আমার পরিবারে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে কবে বাড়ি ফিরতে পারব জানি না। কিন্তু একটা চিন্তা বার বার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে— কাজটা আদৌ থাকবে তো?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement