আবার কি ধস নামবে শেয়ার বাজারে? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দু’মাস পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন ‘বোমা ফাটাতে’ চলেছে আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’? বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় সংবাদ বিষয়ক টুইটার হ্যান্ডল ‘দ্য স্পেক্টেটর নিউজ’-এর একটি টুইটের পর এমনি জল্পনা দানা বেঁধেছে।
টুইটে লেখা হয়েছে, ‘‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ, যার রিপোর্টের জেরে ভারতের আদানি গ্রুপের শেয়ারের দাম এবং ব্যবসা প্রচণ্ড কমেছে, তারা জানিয়েছে, আরও একটি ‘বড় রিপোর্ট’ আসছে।’’ তবে হিন্ডেনবার্গের নয়া রিপোর্টে আবার আদানিদেরই নিশানা করা হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেনি ‘দ্য স্পেক্টেটর নিউজ’।
গত ২৪ জানুয়ারি আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কে প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করে ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এক দশক ধরে আদানি গোষ্ঠী তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ১২,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৯,৭৯,৮০০ কোটি টাকা) নিট সম্পদের ১০,০০০ কোটিই এসেছে গত তিন বছরে, দামে কারচুপির মাধ্যমে শেয়ার সম্পদ চড়িয়ে। গড় বৃদ্ধি ৮১৯ শতাংশ!
মরিশাস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো কিছু দেশ আদানি পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বেআইনি আর্থিক লেনদেন চালানো হয় বলেও অভিযোগ করা হয় রিপোর্টে। বলা হয়েছে, কর ছাড়ের সুবিধা মেলে এমন দেশগুলিতে ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন, কর ফাঁকি এবং আইন ভেঙে নথিভুক্ত সংস্থা থেকে অন্যত্র টাকা সরানোয় লিপ্ত ছিল আদানিরা। ওই রিপোর্ট প্রকাশের পরেই শেয়ার বাজারে আদানিদের শেয়ারের দর পড়তে শুরু করে। বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয় গৌতমের সংস্থা। ভারতের রাজনীতিতেও আদানিকাণ্ড নিয়ে ঝড় উঠেছে। বিরোধীরা মোদী ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতির সংস্থার বিরুদ্ধে জেপিসি (যৌথ সংসদীয় কমিটি) এবং ইডি তদন্তের দাবি তুলেছেন। শেয়ার বাজারে আদানিকাণ্ডের প্রভাব যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদানি গোষ্ঠীতে বিপুল লগ্নি করা দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং ভারতীয় জীবনবিমা নিগম (এলআইসি) কর্তৃপক্ষকে বিবৃতি জারি করে বলতে হয়েছে, তাদের গ্রাহকেরা আদানিদের ভরাডুবি হলেও সুরক্ষিত থাকবেন।