উত্তরপ্রদেশের বিপুল জয়ের পর আট রাজ্যের দশটি উপনির্বাচনে পাঁচটি কেন্দ্রই জিতে নিল বিজেপি। তবে এরই মধ্যে নিজেদের গড়গুলি সামলে রাখল কংগ্রেস।
বিজেপির সব থেকে বড় জয় অবশ্য দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের দলকে ধূলিস্যাৎ করা। আর তার পর রাজস্থানে বিএসপি-র থেকে একটি আসন ছিনিয়ে নেওয়া। পশ্চিমবঙ্গে না জিতলেও দ্বিতীয় স্থানে যাওয়াটাই বড় করে দেখাচ্ছেন অমিত শাহ। এ ছাড়া অসম, মধ্যপ্রদেশ, ভোটমুখী হিমাচলে জেতা আসনগুলি ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান তিন দিন প্রচার করলেও আটার আসনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কংগ্রেস নিজের গড় ধরে রেখেছে। ঝাড়খণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের প্রচারেও জেএমএম হাতছাড়া করতে দেয়নি নিজেদের আসন।
তবে কংগ্রেসের কাছে সব থেকে স্বস্তির বার্তা এনে দিয়েছে কর্নাটক। সামনের বছরেই সে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এস এম কৃষ্ণের মতো নেতারা যখন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাদের আস্ফালনকে নস্যাৎ করে দুটি আসনেই দলকে জিতিয়েছেন। রাহুল গাঁধীর বাহবাও পেয়েছেন তিনি। যে কর্নাটকের পথ ধরে বিজেপি ফের দক্ষিণ ভারতে ঢুকতে চাইছে, সেখানে দুটি আসনেই হার দলকে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে। ইয়েদুরাপ্পা হার কবুল করে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
উপনির্বাচনের ১০
আসন জয়ী
• বান্ধবগড় (মধ্যপ্রদেশ) বিজেপি
• অটের (মধ্যপ্রদেশ) কংগ্রেস
• কাঁথি দক্ষিণ (পশ্চিমবঙ্গ) তৃণমূল
• নঞ্জাগুড় (কর্নাটক) কংগ্রেস
• গুণ্ডলুপেট (কর্নাটক) কংগ্রেস
• ধেমাজি (অসম) বিজেপি
• ঢোলপুর (রাজস্থান) বিজেপি
• ভোরঞ্জ (হিমাচল) বিজেপি
• রাজৌরি গার্ডেন (দিল্লি) বিজেপি
• লিট্টিপাড়া (ঝাড়খণ্ড) জেএমএম
বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘দশটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন এমন কোনও বড় নমুনা নয়। কেন্দ্রীয় স্তর থেকেও কোনও রণকৌশল সে ভাবে তৈরি হয়নি। তবে উত্তরপ্রদেশের বিপুল জয়ের পর দশে সাত বা আটটি আসন জিততে পারলে মোদী-জাদুর প্রচার জমে যেত।’’ অমিত শাহ অবশ্য বলেছেন, ‘‘যেখানে বিজেপি জিতেছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা, উন্নয়নমুখী প্রশাসনের স্বীকৃতি মিলেছে। এই ফল দলের কর্মীদের পরিশ্রমে উৎসাহ দেবে।’’ উপনির্বাচনের ফলাফলের পরে টুইট করে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে ভোট হয়েছে, বিজেপি ও এনডিএ তাতে খুব ভাল ফল করেছে। এই বিশ্বাস ও সমর্থনের জন্য দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁরা উন্নয়নের রাজনীতি ও সুশাসনের উপর আস্থা রেখেছেন।’’ কর্নাটকে বিজেপি সাফল্য না পেলেও সে রাজ্যের মানুষকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:বিরোধীদের রসদ বন্ধে সক্রিয় মোদী
তিনটি আসন জেতার জন্য রাহুল গাঁধীও দলের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, গোয়া-মণিপুরে সরকার গড়তে না পারার পর কর্নাটকে উপনির্বাচনের ফল দশ জনপথকে স্বস্তি দিয়েছে। শিবরাজের রাজ্যে জেতা তো বটেই, দিল্লিতেও কংগ্রেসের ভোট বাড়িয়ে নেওয়া বোঝাচ্ছে, চাইলে দল ঘুরে দাঁড়াতে পারে। মোদীর ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ ভারতের স্বপ্ন অধরা রাখা সম্ভব। আর এর পিছনে বড় সাফল্য রাজ্যের প্রভাবশালী নেতাদের। রাহুল যাঁদের উপর আস্থা রাখেন। পঞ্জাবেও ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহের উপর ভরসা রেখে জেতা সম্ভব হয়েছে।