National news

একা মহিলা, তাই বুক করে রাখা ঘরও দেওয়া হল না

অনেক বোঝানো, চাপাচাপি, তর্ক বিতর্ক সত্ত্বেও তাঁকে তাঁরই বুক করা রুম দেওয়া হল না কিছুতেই। হোটেল ও গ্রাহকদের সুরক্ষার খাতিকেই নাকি এমন নিয়ম!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ১৫:৫৪
Share:

ছবি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে।

আপনি মহিলা এবং একা। তাই আপনার জন্য হোটেলে নো রুম! প্রি-বুকড‌্ হোটেলের রিসেপশনে রীতিমতো হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নূপুর সরস্বত নামের এক প্রবাসী ভারতীয়। অনেক বোঝানো, চাপাচাপি, তর্ক বিতর্ক সত্ত্বেও তাঁকে তাঁরই বুক করা রুম দেওয়া হল না কিছুতেই। হোটেল ও গ্রাহকদের সুরক্ষার খাতিকেই নাকি এমন নিয়ম! হায়দরাবাদের এক হোটেলের এই ঘটনার পর নুপূর প্রশ্ন তুলেছেন সুরক্ষার দোহাই দিয়ে মেয়েদের এমন অসুরক্ষিত এবং অসম্মানজনক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া নিয়ে! সম্প্রতি নিজের সেই বিশ্রী অভিজ্ঞতার কথা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি। নূপুর সরস্বতের সেই পোস্ট এখন ভাইরাল।

Advertisement

এনআরআই নূপুর একজন পেশাদার গায়িকা। থাকেন সিঙ্গাপুরে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় শো করেন। এ রকমই একটা শো-এর জন্য তিনি শুক্রবার সিঙ্গাপুর থেকে হায়দরাবাদে পৌঁছন। অনলাইন ট্র্যাভেল সংস্থার মাধ্যমে আগেই তিনি হায়দরাবাদের ওই হোটেলটি বুক করে রেখেছিলেন। সাত সকালে বিমানে হায়দরাবাদ পৌঁছনোর পর সোজা চলে আসেন হোটেলে। কিন্তু সেখানে যে এ হেন বিপত্তিতে পড়তে হবে তা কে জানত!

আরও পড়ুন: ফ্ল্যাটে ঢুকে তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা নিরাপত্তারক্ষীর

Advertisement

হোটেলের পৌঁছনোর পর প্রি-বুকড‌্ রুমের জন্য রিসেপশনে কথা বলতেই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও রুম পাওয়া যাবে না। কেন জানতে চাইলে তাঁকে হোটেলের গাইডলাইন দেখিয়ে বলা হয়, কোনও সিঙ্গল মহিলাকে সেখানে রুম দেওয়া হয় না। হোটেল এবং গ্রাহকদের সুরক্ষার খাতিরেই নাকি এমন নিয়ম। বুকিংয়ের রেকর্ড দেখিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এতটা জার্নির ধকলের পর শরীর বেশ ক্লান্ত ছিল। তার উপর সঙ্গে ভারী ব্যাগপত্তর। নতুন করে হোটেল খোঁজাটাও কম ঝক্কির নয়।

যে অনলাইন সংস্থা মারফত বুকিং করেছিলেন, নূপুর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অনলাইন সংস্থার তরফ থেকে তাঁকে অন্য হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। গোটা পরিস্থিতির জন্য ক্ষমাও চাওয়া হয়। কিন্তু নূপুর এখানেই থেমে যাননি। কারণ ঘটনাটা শুধু মাত্র হয়রানির নয়। একজন মেয়ের পক্ষে বা মেয়েদের পক্ষে তা অসম্মানেরও। প্রতিবাদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নেন তিনি। ওই দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে লেখেন, ‘‘এটা আমি না হয়ে অন্য কেউ হতে পারত, এটা সকাল না হয়ে গভীর রাত হতে পারত, শুধু ভারতে নয় পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। তা হলে কি মহিলারা একা ট্রাভেল করা ছেড়ে দেবেন? সুরক্ষার জন্য এটাই কি একমাত্র সমাধান?’’

নূপুর আরও বলেন, ‘‘কী ভাবে পিতৃতন্ত্র কাজ করে এটা তার একটা উদাহরণ। প্রথমবার আমি এরকম বৈষম্যের শিকার হলাম। কিন্তু এই বৈষম্য আমাদের থামাতে পারবে না। মহিলারা একা ট্রাভেল করবেই, নিরাপত্তার কথা ভেবে ঘরের ভিতরে লুকিয়ে থাকবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement