হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জঙ্গি হামলায় এক আহতকে। ছবি: পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরে পুণ্যার্থীদের বাসে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করল লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন। রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় একটি মন্দির থেকে ফেরা পুণ্যার্থীদের বাসে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ১০ জনের। আহত হন প্রায় ৩০ জন। রবিবার সন্ধ্যাতেই এই জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় লস্করের শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স’ (টিআরএফ)।
পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর এই টিআরএফ-এর মাধ্যমেই জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায় বলে অভিযোগ। জঙ্গি হামলার পরেই জল্পনা ছড়ায় যে, হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। কিন্তু সেই জল্পনায় জল ঢেলে দায় স্বীকার করল লস্করের মদতপুষ্ট টিআরএফ। যদিও এই দাবির সত্যাসত্য যাচাই করা হচ্ছে।
রবিবার জম্মুর শিবখড়ি মন্দির থেকে কাটরায় বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরের উদ্দেশে যাচ্ছিল পুণ্যার্থীদের বাসটি। সেই সময়েই হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলার জেরে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গড়িয়ে খাদে পড়ে যায়। মৃত্যু হয় ১০ জন পুণ্যার্থীর। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। উদ্ধারকাজ শুরু হয়। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে আশঙ্কাপ্রকাশ করে পুলিশ।
রবিবারই তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন মোদী। আর সে দিনই জঙ্গি হামলার ঘটনায় অস্বস্তিতে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন রাজৌরি-পুঞ্চ এলাকার গভীর জঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বেশ কয়েক জন জঙ্গি। রয়েছেন এক জন পাকিস্তানের নাগরিকও। যদিও গত কয়েক দিনে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সোমবার সকাল থেকেই হামলাস্থল এবং আশপাশে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, জঙ্গি হামলার তদন্তে নামানো হচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে।
গত পাঁচ বছরে রাজৌরি-পুঞ্চ এলাকায় একাধিক বার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই চলেছে। অনেকেই মনে করছেন, মূলত জঙ্গলঘেরা এই এলাকার সুবিধা নিচ্ছে জঙ্গিরা। সম্প্রতি এই অঞ্চলে নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করায় জোর দিয়েছে কেন্দ্র। রবিবারের জঙ্গি হামলার ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন অমিত শাহ। আগামী ২৯ জুন থেকে অমরনাথ যাত্রা শুরু হবে। তার আগে এই ধরনের ঘটনা নিয়ে সতর্ক থাকতে চাইছে সরকার।
ভোটের আবহেও জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হানা হয়েছিল। দু’জায়গায় গুলি চলেছিল গত ১৯ মে। শোপিয়ানের হুরপোরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন এক রাজনৈতিক নেতা। আর একটি ঘটনায় দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের গুলিতে জখম হয়েছিলেন এক পর্যটক দম্পতি।