জ্যান্ত: ডিম-সহ মা। —নিজস্ব চিত্র।
রাতে উঠোনে গেলেই বাড়ির লোকেরা ফোঁস-ফোঁস শব্দটা শুনতে পেতেন। এ যে নির্ঘাত সাপের ফোঁসফোঁসানি, তাও বুঝতে পারতেন। কিন্তু শব্দের উৎস খুঁজে পাননি ধানবাদের পান্ডারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহেন্দ্র সিংহ।
সকালে শব্দটা তেমন শোনা যেত না। কিন্তু রাতে উঠোনে গেলেই হিসহিসানি শুনে গা হিম হয়ে যেত তাঁদের। মহেন্দ্রবাবুর কথায়, ‘‘উঠোন, বাড়িঘর, এমনকী শৌচালয়ও তন্নতন্ন করে খোঁজা হয়েছে। কোথাও কিছু পাইনি।’’ পান্ডারপাড়ায় দোতলা পাকা বাড়ি মহেন্দ্রবাবুর। বাড়ির সামনে একটু ফাঁকা জায়গা, তার পর পাকা উঠোন। শেষ পর্যন্ত ধানবাদ এলাকার সর্পবিশেষজ্ঞ বাঙালি যুবক বাপি দে-র ডাক পড়ে। আজ সকালে বাপিবাবু মহেন্দ্রবাবুর বাড়িতে যান। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে ঢুকেই বুঝে যাই, সিমেন্ট বাঁধানো উঠোনের তলায় সাপের বাসা।’’ শুরু হয় উঠোন ভাঙা। কিছুটা ভাঙতেই বেরিয়ে পড়ে গোখরো সাপ। প্রায় পাঁচফুট লম্বা মা-গোখরো। সঙ্গে ১৬টি ডিম। বাপিবাবু বলেন, ‘‘সাপটা আক্রমণ করেনি। বরং ডিম আগলানোর চেষ্টা করছিল।’’
মায়ের সেই প্রয়াসে অনেকেরই মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। বাপিবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা দক্ষতার সঙ্গেই ডিম অক্ষত রেখে সাপটিকে ধরে ফেলেন। বাপিবাবু বলেন, ‘‘মা ও তার ডিমের যেন কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য সাপটিকে তোপচাঁচির জঙ্গলে যেখানে ছেড়েছি, তার কাছেই গর্ত খুঁড়ে ডিমগুলিকে রেখে এসেছি।’’