মালয়েশিয়ায় বসে ভারতের বিভিন্ন ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল নেপালের ব্যবসায়ী ও আইএসআই এজেন্ট সামসুল হুদা।
আইএসআইয়ের আর এক এজেন্ট মহম্মদ সফির সঙ্গে গত বছর এপ্রিল মাসে কুয়ালালামপুরের পাঁচ তারা হোটেলে বৈঠক করে হুদা। সেখানেই বিহার, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরে রেলে নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়। রেল নাশকতার তদন্তে নেমে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দাদের হাতে এমন তথ্যই এসেছে। এ ছাড়াও, জাল নোটের তদন্তে নেমে বার বার আইএসআই এজেন্ট মহম্মদ সফির নাম উঠে এসেছে এনআইএ-র কাছে।
এনআইএ তদন্তকারী দলের এক অফিসারের কথায়, ‘‘কুয়ালালামপুরের হোটেলে দেখা হওয়ার পরে সফি পরিকল্পনার কথা জানায় বলে হুদার কাছ থেকে জানা গিয়েছে। নেপাল, বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লির ছেলেদের নিয়ে নতুন মডিউল তৈরির প্রস্তাব দেয় সে। টাকার কোনও অভাব হবে না বলেও জানিয়ে দেয়।’’ ওই অফিসারের কথায়, এরপরে হুদা এবং সফি সেখান থেকে দুবাই পৌঁছয়। সেখানে দিন পনেরো থাকার পরে দু’জনে পাকিস্তানে যায়। হুদা তদন্তকারীদের জানিয়েছে কোনও ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে আট থেকে দশ কোটি টাকা আয় করার প্রযোজন ছিল তার। সে কারণেই সফির প্রস্তাব মেনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয় সে।
এর পরে হুদা নেপালের মাফিয়া ব্রজকিশোর গিরির সঙ্গে দেখা করে। টাকার বিনিময়ে রেল লাইনে বিস্ফোরক রাখার প্রস্তাব দেয়। ব্রজকিশোর গিরি বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার বখরির বাসিন্দা দীপক রাম ও অরুণ রামকে নতুন মডিউলে নিয়োগ করে। সন্ত্রাসের এই নতুন বিহার-নেপাল মডিউল এর পরে দেশ জুড়ে অপারেশনে নেমে পড়ে। যদিও ঘোড়াসহন স্টেশনের কাছে নাশকতার পরিকল্পনা সফল না হওয়ায় দীপক-অরুণকে খুন করে ব্রজকিশোর। সেই খুনের তদন্তে নেমেই সমগ্র বিষয়টি সামনে আসে। তবে নেপালের সঙ্গে কোনও বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় সামসুল হুদা, ব্রজকিশোর-সহ চার জনকে হাতে পেতে সমস্যা হচ্ছে এনআইএ-র।
তবে ভারতীয় নাগরিক দীপক রাম ও অরুণ রামকে খুনের অভিযোগে দুবাই থেকে হুদাকে কাঠমাণ্ডু পাঠানো হয়েছে। নেপাল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তাই তাদের জেরা করতে এনআইএ অফিসারদের তাকে জেরা করতে সমস্যা হয়নি।