সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এর ফলে জুলাই মাস থেকেই বাড়তি বেতন হাতে পাবেন ৪৭ লক্ষ কর্মচারীর। পেনশন বাড়বে ৫৩ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওই সুপারিশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ সরকারের খরচ প্রায় ২৩.৫ শতাংশ বাড়বে।
বিচারপতি একে মাথুরের নেতৃত্বাধীন সপ্তম বেতন কমিশন মূল বেতনে ১৪.২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম বেতন মাসে ১৮ হাজার টাকা ও সর্বাধিক বেতন মাসে আড়াই লক্ষ টাকা করারও সুপারিশ করেছিল বেতন কমিশন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতনক্রম কার্যকর হবে। নতুন হারে বেতন চালু হলে কবে থেকে বকেয়া বেতন মিলবে, তা এক কিস্তিতেই মিলবে কি না, তা জানার জন্যও এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা।
সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ ঘিরে প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে অসন্তোষ ছিল। সকলেরই দাবি ছিল, কমিশন যে বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে, তা যথেষ্ট নয়। সঙ্ঘ-পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও এ নিয়ে আপত্তি তোলে। যুক্তি ছিল, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মূল বেতন, ভাতা ইত্যাদি মিলে মাত্র ১৬ শতাংশ মোট বেতন বৃদ্ধি হবে। তাই দাবি ওঠে, কমিশনের সুপারিশের থেকেও বেশি হারে বেতন বাড়াক মোদী সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ বছর অন্তর বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে বেতন কাঠামো বদল হয়। এতদিন যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু ছিল, তার সুপারিশ কার্যকর হয়েছিল ২০০৬-র ১ জানুয়ারি থেকে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মোট বেতন প্রায় ৩৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছিল। এবার তাই মোদী সরকারের কাছে দাবি ছিল, অন্তত ৩০ শতাংশ মোট বেতন বৃদ্ধি করা হোক। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল বেতন প্রায় ২১ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় পৌঁছতে পারে।
কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ সরকারের খরচ প্রায় ২৩.৫ শতাংশ বাড়বে। অর্থ মন্ত্রকের অনুমান, সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর করতে গেলে সরকারি কোষাগারে ১.০২ লক্ষ টাকার বাড়তি বোঝা চাপবে। এর মধ্যে রেল কর্মচারীদের জন্য রেলের বাজেট থেকে ব্যয় হবে ২৮,৪৫০ কোটি টাকা। সাধারণ বাজেট থেকে ব্যয় হবে ৭৩,৬৫০ কোটি টাকা। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ায় আরও এক দফা মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।