—প্রতীকী চিত্র।
সাইবার জালিয়াতির আন্তর্জাতিক চক্র ধরল হায়দরাবাদ পুলিশ। সোমবার সংবাদমাধ্যমকে হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দ জানিয়েছেন, এক বছরের কম সময়ে এই চক্র প্রতারণা করে ৭০০ কোটি টাকা চিন, দুবাইয়ে পাঠিয়েছে। নিজামের শহরের পুলিশ আরও জানিয়েছে, টাকা গিয়েছে লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হেজ়বুল্লাহের একাধিক অ্যাকাউন্টেও। এখনও পর্যন্ত এই চক্রের সঙ্গে জড়িত মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আরও ছ’জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দ বলেন, ‘‘এমনই নিপুণ কায়দায় প্রতারণা চালাচ্ছিল এই দলটি যে, একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারও তাদের ফাঁদে পা দিয়ে ২৮ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন।’’ গত এপ্রিল মাসে সাইবার প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে হায়দরাবাদ পুলিশ। মাস দুয়েক যাওয়ার পর পুলিশ আন্দাজ করেছিল ৫২৮ কোটি টাকার প্রতারণা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত আরও কিছুটা এগনোর পর পুলিশ বুঝতে পারে অঙ্কটা ৭০০ কোটি!
হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যা হিসাব তাতে ১৫ হাজার লোক প্রতারিত হয়েছেন। কিন্তু এটা নিশ্চিত করা বলা যাবে না। হয়তো দেখা যাবে ৫০ হাজার মানুষের সঙ্গে এই প্রতারণা হয়েছে। যে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে চার জন হায়দরাবাদের, তিন জন মুম্বইয়ের, দু’জন আমদাবাদের।
পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল। চিনের হ্যাকাররাই এই জালিয়াতির নেপথ্যে রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে বিনিয়োগ ও আংশিক সময়ের কাজের টোপ দিয়ে এই জালিয়াতি চলছিল। টাকা দেওয়ার পর দ্বিগুণ ফেরত দিয়ে প্রথমে বিশ্বাস অর্জন করত প্রতারকরা। তারপর আরও বেশি বিনিয়োগ করিয়ে লোপাট করে দেওয়া হত টাকা। পুলিশের বক্তব্য, ইউটিউব ভিডিয়ো লাইক করানো বা গুগলে মতামত লেখানোর আপাত সাধারণ কাজ করিয়েই কেল্লা ফতে করত প্রতারকরা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে অজস্র ভুয়ো সংস্থার নামে টাকা লেনদেন চলছিল। সেই সব অ্যাকাউন্টের লেনদেনের সূত্রেই পুলিশ এই ন’জনকে গ্রেফতার করেছে। মোট ১১৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। হায়দরাবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে সমস্ত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে। অবগত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককেও।