অতিমারিকালের স্কুল শিক্ষা রিপোর্টে উদ্বেগ!
অতিমারিকালে সরকারি নির্দেশে অনলাইনে চলেছিল দেশ জুড়ে স্কুলের পঠনপাঠন। তাজ্জব ব্যাপার, ওই সময় দেশের অধিকাংশ স্কুলে নাকি ইন্টারনেট পরিষেবাই ছিল না! ছিল না কম্পিউটারও! খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টেই প্রকাশ্যে এসেছে এই তথ্য। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২১-’২২ শিক্ষাবর্ষে দেশের ৬৬ শতাংশ স্কুলে ইন্টারনেটের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কম্পিউটার ছিল না ৫৫.৫ শতাংশ স্কুলে।
বৃহস্পতিবার জেলাভিত্তিক শিক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। রিপোর্টটির নাম ‘দ্য ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন’ (ইউআইডিএসই)। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এই রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছে, দেশের ১৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ১১৫টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৬ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৬৬টি স্কুলে রয়েছে কম্পিউটার। আর ইন্টারনেট পরিষেবা রয়েছে তার চেয়েও কম, ৫ লক্ষ ৪ হাজার ৯৮৯টি স্কুলে।
রিপোর্টে আরও উদ্বেগের বিষয় হল, ১২.৭ শতাংশ স্কুলে নেই পাঠাগার। ডিজিটাল পাঠাগারের ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ২.২ শতাংশ স্কুলে। দেশের এখনও ১০.৬ শতাংশ স্কুলে বিদ্যুৎই পৌঁছয়নি। খেলার মাঠ নেই ২৩.০৪ শতাংশ স্কুলে। বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা আছে মাত্র ২৬.৯৬ শতাংশ স্কুলে।
বিগত কয়েক বছর ধরেই স্কুলে ‘স্মার্ট ক্লাস’ নিয়ে সারা দেশে আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে। যার অর্থ, চক-ডাস্টারের পরিবর্তে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুমে থাকবে ডিজিটাল বোর্ড, কম্পিউটার, প্রোজেক্টর-সহ নানা ব্যবস্থা। ব্ল্যাক বোর্ডে চকখড়ি দিয়ে লিখতে যে সময় লাগে, ডিজিটাল বোর্ডে মাউসের ক্লিকে তা মুহূর্তে হয়ে যাবে। কিন্তু দেশের মাত্র ১৪.৯ শতাংশ স্কুলে রয়েছে এই ব্যবস্থা।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
তবে স্কুলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব শ্রেণিতেই তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির ছেলেমেয়েদের সংখ্যা খানিকটা বেড়েছে ২০২০-’২১ শিক্ষাবর্ষে। রিপোর্ট বলছে, ওই সময়ের মধ্যে তফসিলি শ্রেণির পড়ুয়াদের সংখ্যা ৪.৭৮ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৪.৮৩ কোটি। তফসিলি উপজাতির পড়ুয়াদের সংখ্যা ২.৪৯ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ২.৫১ কোটি। স্কুলে বেড়েছে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) ছেলেমেয়েদের সংখ্যাও।