মুম্বইয়ের লাগানো বিভিন্ন সংস্থার হোর্ডিং। ছবি: সংগৃহীত।
মুম্বইয়ের বিলবোর্ডকাণ্ডের স্মৃতি এখনও টাটকা। ধুলোঝড়ে ‘ দৈত্যাকার’ বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে এবং তার নীচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১৬ জন। সেই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। শহর জুড়ে যে সব বিজ্ঞাপন হোর্ডিং, বিলবোর্ড রয়েছে, তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র হাউসিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমএইচডিএ) একটি সমীক্ষা চালায়। সেই সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের ৬২টি হোর্ডিংয়ের মধ্যে ৬০টির ক্ষেত্রেই কোনও ছাড়পত্র নেই!
শহরের কোথাও হোর্ডিং, ব্যানার বা বিলবোর্ড লাগাতে গেলে সংশিষ্ট সরকারি সংস্থার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন। ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) পেলে তবেই বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং দিতে পারে কোনও সংস্থা। কিন্তু এমএইচডিএ-র প্রকাশিত নয়া তথ্য বলছে, বিএমসি-র অনুমতি নিয়ে শহরে লাগানো বেশির ভাগ হোর্ডিংয়ের ক্ষেত্রেই এনওসি নেই।
এমএইচডিএ একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি) বিজ্ঞাপনদাতাদের নোটিস জারি করেছে। সেই নোটিসে বলা হয়েছে, অবিলম্বে যেন তারা এমএইচডিএ-র কাছ থেকে এনওসি সংগ্রহ করে। যদি তা করতে ব্যর্থ হয়, তবে বিজ্ঞাপনের অনুমতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
মুম্বইয়ের বিলবোর্ডকাণ্ডের পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নির্দেশে এমএইচডিএ সমীক্ষা চালিয়েছিল। শহরের যত হোর্ডিং, ব্যানার লাগানো ছিল সেগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয় সেই সমীক্ষায়। এমএইচডিএ জানিয়েছে, যে সব সংস্থা বেআইনি ভাবে হোর্ডিং লাগিয়েছে, তাদের তা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ মানা না হলে হোর্ডিংগুলি ভেঙে ফেলা হবে বলেও নোটিসে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে মুম্বইয়ের ঘাটকোপর এলাকায় উপড়ে যায় একটি বিশালাকার ধাতব বিজ্ঞাপনের বোর্ড। ভেঙে পড়া সেই বিলবোর্ডের নীচে চাপা পড়েন অনেকেই। তার পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। গ্রেফতার করা হয় ওই বিলবোর্ড লাগানো সংস্থা ‘ইগো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’-এর মালিক ভবেশ ভিন্ডেকে। তদন্তে উঠে আসে যে, বিলবোর্ডটি ঝড়ের কারণে ভেঙে পড়েছিল, তার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ ছিল ১২০ ফুট করে। অথচ, মুম্বই শহর এলাকায় ৪০ ফুটের বেশি লম্বা বা চওড়া কোনও বিলবোর্ডকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা নয় পুরসভার।