অসমের ‘ফরেনার্স ট্রিবিউনাল’গুলিতে সন্দেহভাজন নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষের বেশি। আজ বিধানসভায় এ কথা জানাল রাজ্য সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে বিদেশি হিসেবে ৫৮ হাজার ৩৫৫ জনকে চিহ্নিত করেছে আদালত। ভারতীয় নাগরিকের স্বীকৃতি পেয়েছেন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৯৫ জন। তাঁদের মধ্যে ‘ডি ভোটার’-এর (ডাউটফুল ভোটার) সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার ৩৭৮ জন। ভারতীয় হিসেবে প্রমাণিত ব্যক্তিদের নামের সঙ্গে জুড়ে থাকা ‘ডি’ অক্ষর সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভোটার তালিকায় ২৫ হাজার ৬০৯ জনের নাম থেকে ‘ডি’ সরানো হয়েছে। ভারতীয় হিসেবে রায় ঘোষণার পর ৩০ হাজার ৪৩৮ জন ‘ডি ভোটারের’ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনামা সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে পাঠানো হয়েছে।
এ দিন বিধানসভায় এআইইউডিএফ বিধায়করা প্রশ্ন তোলেন, ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জী ও তার পরের ভোটার তালিকায় কারও কারও নাম ভুল নথিভুক্ত করা ছিল। সে কারণে কম্পিউটারের তথ্যের সঙ্গে সঠিক নাম মিলছে না। এনআরসি সহায়তা কেন্দ্রগুলিতেও ১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার মাঝামাঝি সময়ের তথ্য-তালিকা নেই বা অসম্পূর্ণ। ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকাও অসম্পূর্ণ। রাজ্য সরকার জানায়, ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জীতে যাঁদের নাম ও পূর্বপুরুষের নাম ভুল নথিভুক্ত ছিল, সে সব ক্ষেত্রে সঠিক নাম ও পরিচিতির এফিডেভিট ‘ফিল্ড ভেরিফিকেশন’-এর ভিত্তিতে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতেপারেন নোডাল অফিসার। সরকারের হাতে থাকা তথ্য, ভোটার তালিকাও নাগরিক পঞ্জী ইন্টারনেটে ‘আপলোড’ করা হচ্ছে। যাতে সেখানে যাচাই করে নাগরিকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেন। রাজ্যের সব এনআরসি সেবা কেন্দ্রে ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জী এবং ১৯৬৬ ও ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার প্রতিলিপি মিলবে।
বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, বড়োভূমিতে গাঁওবুড়ো কাঠামো নেই। অনেক বিবাহিতা মহিলার কাছেই প্রয়োজনীয় স্থানান্তরকরণ শংসাপত্র থাকে না। বাইরের রাজ্য থেকে অসমে আসা ব্যক্তিদেরও নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার সুযোগ ছিল না। তাদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে? স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে মন্ত্রী রকিবুল হুসেন জানান, যে কোনও প্রামাণ্য সরকারি নথি এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে। কেন্দ্রের গাইডলাইন ও সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে ওই বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, “প্রকৃত ভারতীয়দের নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত না করতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসুবিধা ও নিয়মের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কেন্দ্র, সুপ্রিম কোর্ট ও ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতরকে জানানো হচ্ছে। তবে, ওই দফতর থেকে বার বার এনআরসি হ্যান্ডবুক চেয়েও পাওয়া যায়নি।” স্বরাষ্ট্র দফতর জানায়, গোয়ালপাড়া শিবিরে ৯৮ জন, কোকরাঝাড় শিবিরে ৪৪ জন ও শিলচর শিবিরে ৩৮ জন আদালতে চিহ্নিত বিদেশিকে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩৬ জন পুরুষ ও ৪৪ জন মহিলা।