কোঝিকোড়ের কুট্টিয়াড়িকে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা। ছবি: পিটিআই।
কেরলে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে নিপা ভাইরাস। রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ জন। নিপায় আক্রান্ত এক রোগীর সংস্পর্শে আসায় এক স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তা পজ়িটিভ আসে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ। তবে এর থেকেও যে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে, তা হল, এই রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনের সংখ্যা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, বুধবার যে স্বাস্থ্যকর্মী নিপায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁকে কোঝিকোড়ের একটি হাসপাতালে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিপায় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনের সংখ্যাও কম নয়। ৭০৬ জন। যা উদ্বেগজনক। সংস্পর্শে আসা ওই ৭০৬ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ৭৭ জনকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মৃদু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৩ জন। তাঁদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যেই নিপায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
নিপার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোঝিকোড়ে উৎসব, অনুষ্ঠান এবং জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বুধবারই বেশ কয়েকটি গ্রামকে চিহ্নিত করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কনটেনমেন্ট জ়োন) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারাকারা তালুকের ন’টি পঞ্চায়েতের ৫৮ ওয়ার্ডকে গন্ডিবদ্ধ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে লক্ষ রেখে স্কুল, কলেজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, নিপার যে রূপটি পাওয়া গিয়েছে সেটি বাংলাদেশ রূপ। এই রূপটির সংক্রমণের হার কম, কিন্তু মৃত্যুর হার বেশি।
নিপার সংক্রমণ ঠেকাতে ১৯টি কোর কমিটি গঠন করেছে সরকার। স্বেচ্ছাসেবী দলও গঠন করা হয়েছে। যাঁদের নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সব রকম সহযোগিতা করবে এই দল। অন্য দিকে, নিপার আতঙ্ক ছড়িয়েছে প্রতিবেশী রাজ্য কর্নাটকেও। কেরলে নিপার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ওই রাজ্য থেকে আসা সমস্ত ফল পরীক্ষা করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্নাটক সরকার। কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতর পুলিশকে বলেছে, সীমানা দিয়ে যে সব ফলের গাড়ি কর্নাটকে ঢুকবে, সেগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।