প্রতীকী ছবি।
চার বছরের ছেলেটার চোখটা কোটর থেকে ঠেলে বেরিয়ে এসেছিল। সেই চোখ দুটো রক্তে ভরা। চিকিৎসকেরা জানান, বিরল লিউকোমিয়াতেই এমন কাণ্ড। চিকিৎসার যা খরচ তা বহন করার ক্ষমতা বাবা, প্রকাশ দোরজির পক্ষে সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিন বছর পরে, সেই ছেলে শুধু ফিরেই আসেনি, ফিরে পেয়েছে একটি চোখের দৃষ্টিশক্তিও।
সাগরের বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার চোখে পড়ে। তাঁরই উদ্যোগে সরকারি খরচে সাগরকে কেমোথেরাপির জন্য পাঠানো হয় বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু ‘অ্যাকিউট মায়োলয়েড লিউকোমিয়া’র চিকিৎসার জন্য বিস্তর টাকার দরকার। ব্রিটেন-প্রবাসী ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার নীতা শিবা সাগরের কথা জানতে পারেন। তিনি প্রথমেই সাগরের কর্নিয়া বদল করা ও চোখের অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ সাড়ে তিন হাজার পাউন্ড পাঠান। এরপর সাগরের চিকিৎসা, তাঁর পরিবারের থাকা-খাওয়ার খরচও বহন করতে থাকেন। পেশায় কৃষক প্রকাশ দোরজি বলেন, গত তিন বছর আমাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে উঠেছেন নীতা ম্যাডাম। সরকারের তরফেও ছেলের চিকিৎসায় কয়েক লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করা হয়।
সাগরের লিউকোমিয়া সারিয়ে তোলা চিকিৎসক সুনীল ভাট জানান, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে তিন বছর কেটেছে। সাত বছরের সাগরকে এখন সুস্থই বলা চলে। হায়দরাবাদের এল ভি প্রসাদ হাসপাতালে সাগরের চিকিৎসা করেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ কেন নিশ্চল ও রামাপ্পা মুরলীধর।
আরও পড়ুন: মায়ের থেকে ক্ষতিপূরণ চান ছেলে
ক্রিকেটের ভক্ত সাগরের এক চোখের দৃষ্টি ফিরেছে। তাই নিয়েই সে খেলা দেখা আর পড়াশোনা শুরু করেছে। নীতাদেবী জানান, তিন বছর আগে সাগরের রক্তাক্ত চোখ, যন্ত্রণা আর মৃত্যুর জন্য দিন গোনার কথা ভুলতে পারেন না। সেই ছেলে যে ফের দেখতে পাচ্ছে, সুস্থ হয়েছে- তা কেবল সাগরের অসম্ভব মনের জোরের ফল। এত কষ্টেও ও ভেঙে পড়েনি। বাঁচার আশা, দেখার আশা ছাড়েনি। বন্ধ হয়নি ওর হাসি।