এই মামলায় দোষীকে জেলে পাঠানোর সময় তাঁর পারিবারের আর্থিক সমস্যা-সহ মায়ের অসুস্থতার কথাও মাথায় রেখেছে আদালত। প্রতীকী ছবি।
কিশোরীর ঠোঁটে একশো টাকার নোট ঘষতে ঘষতে ‘দর বাড়ানোর’ মতো কটূক্তি করায় তার শ্লীলতাহানি এবং যৌন হেনস্থা হয়েছে। ৩২ বছরের এক যুবকের বিরুদ্ধে এমনই রায় দিয়ে তাঁকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল মুম্বইয়ের বিশেষ পকসো আদালত। গত সপ্তাহে এই রায়দানের বিষয়টি মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ১৬ বছরের এক কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই ওই যুবককে গ্রেফতার করে পকসো আইনে (প্রোটেকশন ফর চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট) মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পরের বছরের এপ্রিলে এই মামলায় জামিন পেলেও অন্য এক অপরাধে আবার গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই অভিযুক্তকে। যদিও এটি মুম্বইয়ের কোন এলাকার ঘটনা, তা জানা যায়নি।
পুলিশের কাছে কিশোরীর অভিযোগ ছিল, বাড়ির বাইরে গেলে সব সময়ই তার পিছু ধাওয়া করেন ওই যুবক। কলেজে যাওয়ার পথে তাকে লক্ষ্য করে শিস দেওয়া বা নানা কটূক্তিও করতেন। (২০১৭ সালের ১৩ জুলাই) রাত ৮টা নাগাদ এক পড়শির সঙ্গে বাজারে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ও তাঁর পিছু নিয়েছিলেন যুবকটি। আচমকাই তার সামনে এসে দাঁড়ান তিনি। এর পর তার মুখের সামনে একটা একশো টাকার নোট ঘোরাতে থাকেন। সেটি তাঁর ঠোঁটে ঘষতে ঘষতে বলেন, ‘‘কেন এমন করছিস? নিজের এত দর বাড়াচ্ছিস কেন তুই?’’ রেগেমেগে চিৎকার জুড়ে দিলেও বাজারের কেউ তার পাশে এসে দাঁড়াননি। তবে তখনকার মতো বাড়িতে ফিরে এসে মাকে গোটা ঘটনাটি বলে সে। এর পর মাকে নিয়ে অভিযুক্তের বাড়ি তাঁর মুখোমুখি হলে গালিগালাজ করে তাঁদের বার করে দেওয়া হয়। এর পর ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে কিশোরী।
এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তের এই আচরণ শ্লীলতাহানি এবং যৌন হেনস্থার সমান। পাশাপাশি, আদালতে ওই কিশোরীর বয়ানের সঙ্গে সেই পড়শির কথার কোনও অসঙ্গতি মেলেনি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কিশোরীর পুরনো শত্রুতাও নেই যে, সে মিথ্যা কথা বলবে। এর পর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত।
যদিও এই মামলায় দোষীকে জেলে পাঠানোর সময় তাঁর পারিবারের আর্থিক সমস্যা-সহ মায়ের অসুস্থতার কথাও মাথায় রেখেছে আদালত। তাঁর মা ক্যানসার আক্রান্ত। পাশাপাশি, সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ওই যুবক। এই মামলায় রায়দানের সময় বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক এসসি যাদবের মন্তব্য, ‘‘এ ধরনের অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করে উপয়ুক্ত সাজা দেওয়াই আদালতের কর্তব্য।’’