সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই হাতির ছবি।
কেরলের মল্লপুরমে গর্ভবতী হাতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে তদন্তকারী দল। আজ এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ঘটনাটি নিয়ে কেরল সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
মৃত হাতিটি কেরলের সাইলেন্ট ভ্যালি জাতীয় উদ্যানে থাকত। সেখান থেকে পলক্কড় জেলার গ্রামে খাবারের খোঁজে এসেছিল সে। অভিযোগ, গ্রামে বাজি ভরা ফল খেয়ে তার নীচের চোয়াল ও জিভে গুরুতর আঘাত লাগে। পরে ভেলিয়ার নদীতে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল হাতিটি। বন বিভাগ প্রশিক্ষিত হাতির সাহায্যে তাকে তীরে তুলতে চাইলেও পারেনি। সেখানেই হাতিটি মারা যায়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন আগেই ওই আঘাত পেয়েছিল হাতিটি। ফলে সে ভাল করে খেতে পারেনি। চেহারাও শীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ওই এলাকায় খেতের ফসল বুনো শুয়োরের হাত থেকে বাঁচাতে খাবারে বিস্ফোরক ভরে রাখার প্রচলন আছে। এ নিয়ে আগেও বহু বার সমালোচনা করেছে নানা শিবির। তবে মৃত হাতিটি তেমন ফল খেয়েই আঘাত পেয়েছে কি না তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন বন বিভাগের আধিকারিকেরা।
গত কালই মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘‘দোষীদের গ্রেফতার করার জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ করা হবে।’’ আজ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরও। তাঁর কথায়, ‘‘বাজি খাইয়ে খুন করা ভারতীয় সংস্কৃতি নয়। দোষীদের গ্রেফতার করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হবে।’’ এ নিয়ে কেরলের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু জাভড়েকরের টুইটে বলা হয়, ঘটনাটি মালাপ্পুরম জেলায় ঘটেছে। এর পরে বিজয়ন টুইটে বলেন, ‘‘কেরল ও মালাপ্পুরমের বিরুদ্ধে প্রচার চলছে। তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও শামিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইটে ভুল করে মালাপ্পুরমের কথা বলা হয়ে থাকলে তা সংশোধন করা হত। বোঝা যাচ্ছে ইচ্ছে করেই ওই জেলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেউ কেউ এই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িতাকে মেশাতে চাইছেন। তাঁরা ভুল বিষয় নিয়ে ভাবছেন।’’
আরও পড়ুন: শিশুর দুধ পৌঁছে দিতে চলন্ত ট্রেনের পিছনে দৌড় আরপিএফ কর্মীর
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিন জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা। কেরল পুলিশের ১০ জন সদস্যের একটি সিট এই ঘটনার তদন্ত করছে। তারা মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে হাতিটির গতিবিধির একটি চিত্র তৈরির চেষ্টা করছে।
হাতি বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়ার কথায়, ‘‘মানুষ যে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, তা আমার কল্পনার অতীত। বিষক্রিয়ায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বাজি ভর্তি ফল খেয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনা আমি আগে কখনও শুনিনি।’’ ‘প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট’-এর তরফে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে কেরলের ওই এলাকায় দল পাঠাবে। তাদের মতে, এটা ‘গুরুতর অপরাধ’।