রণক্ষেত্র: কাশ্মীরের পুলওয়ামার এই বাড়িতেই খতম হয়েছে তিন জঙ্গি। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।
নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ফের কাশ্মীরে হামলা চালানোর চেষ্টা করল পাকিস্তানি সেনার বিশেষ বাহিনী ব্যাট। সেই হামলা রুখে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। অন্য দিকে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তিন লস্কর জঙ্গি।
সেনা জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে আজ নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৬০০ মিটার ঢুকে আসে পাক সেনার ব্যাট বাহিনীর একটি জনা তিনেকের দল। সেই সময়েই ওই এলাকায় হাজির হয় ভারতীয় সেনার এক টহলদারি বাহিনী। তাদের উপরে হামলা চালায় ব্যাটের দলটি। ওই দলটিকে সাহায্য করতে পাকিস্তানি সেনার পোস্ট থেকেও ভারতীয় সেনাকে লক্ষ করে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। সংঘর্ষে ব্যাটের দলটির দু’জন খতম হয়। এক জন পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পালিয়ে যায়। নিহত হন দুই ভারতীয় জওয়ান যাদব সন্দীপ সরোজিরাও এবং মানে সাভন বালকু। এখনও অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সেনা।
পাক সেনার ব্যাট বাহিনীতে কম্যান্ডোদের সঙ্গে থাকে জঙ্গিরাও। চলতি বছরে বেশ কয়েক বার নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে হামলা চালিয়েছে ওই বাহিনী। এপ্রিল মাসে দুই ভারতীয় জওয়ানকে খুন করে তাঁদের মুন্ড কেটে নিয়ে যায় ব্যাটের সদস্যরা। মে মাসে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ব্যাট বাহিনীর একটি দলের উপরে ভারতীয় সেনার পাল্টা হামলায় দুই পাক সেনা নিহত হন।
অন্য দিকে রাতভর অভিযান চালিয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় তিন লস্কর জঙ্গিকে খতম করেছে সেনা। বাহিনীকে বাধা দিতে পাথর ছোড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে এক স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়েছে।
সেনার মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়া জানান, কাল পুলওয়ামায় কাকাপোরার নিউ কলোনি এলাকায় তিন লস্কর জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পান গোয়েন্দারা। তার পরেই অভিযানে নামে বাহিনী। রাত ন’টা নাগাদ বাহিনীকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে জঙ্গিরা। প্রথম দফার লড়াইয়ে আহত হন ৫৫ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কম্যান্ডিং অফিসার এবং সেনার এক মেজর।
অভিযানের খবর পেয়ে বাহিনীকে বাধা দিতে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। প্রায় ছ’ঘণ্টা লড়াইয়ের পরে খতম হয় তিন জঙ্গি। পুলিশের দাবি, এদের মধ্যে শরিক ও মজিদ কাকাপোরার বাসিন্দা। সাবিরের বাড়ি অবন্তীপোরার পদগামপোরায়।
তিন জঙ্গির দেহ কবর দেওয়ার পরে কাকাপোরার পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় জনতা। সংঘর্ষে তওসিফ আহমেদ ওরফে ছোটা গিলানি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়। পুলিশের দাবি, ২০১০ থেকে বাহিনীর উপরে পাথর ছোড়ায় যুক্ত ছিল তওসিফ। দক্ষিণ কাশ্মীরে অতিরিক্ত ২ হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।